প্রতীকী ছবি।
নিকাশি খাল সংস্কারে ‘সমন্বয়-দড়ি’ আর আলগা রাখতে চায় না সেচ আর পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে সেই দড়ি কষে বাঁধতে শুরু করেছে তারা। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে পুর এলাকায় নিকাশি খালের সংস্কার নিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য পুর দফতরে জমা দিয়েছে সেচ দফতর। তা নিয়ে পদক্ষেপ করতে সমন্বয়কারী টিমও তৈরি হয়েছে দুই দফতরের তরফে। কিন্তু বর্জ্য ফেলার স্থানাভাবই ভাবাচ্ছে সেচ ও পুর দফতরকে।
পরিষ্কারের পরে ফেলার জায়গার অভাবে খালের পাশেই অনেক সময় বর্জ্য ডাঁই করে রাখে সেচ দফতর। আর সেই বর্জ্য ধীরে ধীরে জলে ধুয়ে বা শুকিয়ে গিয়ে উড়ে আবার খালে পড়তে থাকে। কখনও ওই খাল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের অনেকে বাড়ির ময়লা খালে ফেলেন। নির্মাণসামগ্রীও নিকাশি নালাতে যায়। মূলত এই সব কারণেই বর্জ্য জমতে থাকে খালে। বাড়ে মশার উপদ্রব ।
খালের বর্জ্য তুলে দূরে ফেলার মতো জায়গা অনেক পুর এলাকায় ‘অপ্রতুল’— তা বলছেন বিভিন্ন পুর কর্তৃপক্ষ। তাই এ পরিস্থিতিতে বর্জ্য দূরে সরিয়ে সংস্কার কী ভাবে করা যায়, তার পরিকল্পনা করতে সমন্বয়কারী টিম তৈরি করছে সেচ আর পুর দফতর। টিমে থাকবেন সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা, পুর দফতরের যুগ্মসচিব ও ইঞ্জিনিয়াররা, স্থানীয় পুর প্রতিনিধি। কোভিড-১৯, ডেঙ্গি, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা-সহ নানা দৈনন্দিন কাজকর্ম দেখাশোনার জন্য জেলাভিত্তিক নোডাল আধিকারিক রয়েছেন পুর দফতরের। নিকাশি খালে ময়লা জমে থাকার সমস্যা দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলিতে অনেকাংশে বেশি। সেচ দফতর সূত্রে খবর, এমন প্রায় ৭০-৭৫ স্থানের কথা জানানো হয়েছে পুর দফতরকে। সেচ দফতরের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুসারে, চার জেলা মিলিয়ে নিকাশি খালে ময়লা ফেলার সমস্যা রয়েছে কমবেশি ৩০টি পুর এলাকায়।
নিকাশি খাল সংলগ্ন এলাকায় ভ্যাট করা যায় কি না, তা নিয়ে চর্চা রয়েছে সেচ দফতরে। পুর দফতরকে ভ্যাট তৈরির প্রস্তাব দেওয়ার পক্ষেই মত সেচ দফতরের। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে ভ্যাট করতে গেলে যে জায়গা আর অর্থের প্রয়োজন হবে, তা সংশ্লিষ্ট পুরসভা কতটা বহন করতে পারবে, তা নিয়ে সংশয়ে প্রশাসনিক কর্তারা।
ডেঙ্গি মোকাবিলায় ঘাটতি হলে পুরমন্ত্রীকেই ‘ধরবেন’ বলে মঙ্গলবার প্রশাসনিক মূল্যায়ন বৈঠকে বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে ডেঙ্গির মোকাবিলার জন্য আরও সক্রিয় হয়েছে পুর দফতর। মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার সব পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে করোনা আর ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিয়ো বৈঠকে আলোচনা করেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। নবান্ন সূত্রের খবর, তেমন ভাবেই রাজ্যের অন্য সব পুরসভার সঙ্গে তিনি কথা বলতে পারেন।