শেখ শাহজাহান। —ফাইল চিত্র।
‘দাদা’ কোথায় জানেন না, তবে তিনি নিজের এলাকায় আছেন বহাল তবিয়তেই।
সন্দেশখালির ‘বেতাজ বাদশা’ শেখ শাহজাহানের ‘ডান হাত’ বলে পরিচিত জিয়াউদ্দিন মোল্লা সংবাদমাধ্যমকে শুক্রবার বলেছেন, ‘‘পালিয়ে বেড়ানো মানে তো অনেক দূরে চলে যাওয়া। আমি আমার ২৩টা বুথের মধ্যে, সরবেড়িয়ার পাশেই আছি।’’ ইডির উপরে হামলার পিছনে তিনিও অন্যতম চক্রী, এমন অভিযোগ উঠেছে। এবং পুলিশ তাঁকে এখনও ‘খুঁজে পায়নি’। তৃণমূল নেতা শাহজাহানের নিজস্ব বাহিনীর অন্যতম মুখ সেই জিয়াউদ্দিন সরবেড়িয়ার আগারহাটি পঞ্চায়েতের প্রধান। হামলার পরে এলাকায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। পরে কিছু দিন গা ঢাকা দেন বলে দাবি। শুক্রবার ফের এলাকায় দেখা গিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।
প্রশ্নের জবাবে জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘‘রেশন দুর্নীতির সঙ্গে এক ফোঁটা যোগ নেই (শাহজাহানের)। কোনও প্রমাণ কেউ করতে পারবে না।’’ শাহজাহান কোথায়? জিয়াউদ্দিনের জবাব, ‘‘আছেন কোথাও না কোথাও। তবে কোথায় আছেন, বলতে পারব না।’’
গন্ডগোলের দিনের কথা বলতে গিয়ে জিয়াউদ্দিন জানান, ইডির এক অফিসারের মাথা ফেটে রক্ত পড়তে দেখে নিজের সাদা রুমাল মাথায় বেঁধে দিয়েছিলেন। তার পরে মোটরবাইকে তুলে দেন। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় বাহিনীর দুই জওয়ানকে গ্রামের মানুষ ধাওয়া করেছে দেখে তাঁদের অটোয় তুলে দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন।
শাহজাহান বা জিয়াউদ্দিন, পুলিশ কাউকেই ধরতে পারছে না কেন? বসিরহাট পুলিশ জেলার এক কর্তার ব্যাখ্যা, ‘‘আদালতের নির্দেশে ন্যাজাট থানার পুলিশ আর কোনও তদন্ত করছে না।’’ কিন্তু ঘটনার পরে প্রায় ১২ দিন তদন্তের দায়িত্ব ছিল জেলা পুলিশের হাতে। তখন কী করছিল তারা? ওই পুলিশকর্তার দাবি, জিয়াউদ্দিনের বিরুদ্ধে ইডি সরাসরি অভিযোগ করেনি। ভিডিয়ো ফুটেজেও জিয়াউদ্দিনকে হিংসার ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকতে দেখা যায়নি। তাই তাঁকে ধরতে চেষ্টা করেনি পুলিশ। কিন্তু কান টানলে কি মাথা আসত না? উত্তর নেই পুলিশের কাছে।
বসিরহাট জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, শাহজাহানকে ধরতে প্রথম থেকেই সক্রিয় ছিল তারা। কিছুটা সময় লাগছিল। চেষ্টা করেও ইডি এবং সিআরপিএফের জওয়ানদের বয়ান রেকর্ড করা যায়নি। সাহায্য না পেয়ে তদন্তে সমস্যা হচ্ছিল পুলিশের। এই বিষয়টি আদালতেও জানানো হয়েছে বলে পুলিশের দাবি।