SSC Recruitment

Teacher Recruitment: কত টাকা দিয়ে চাকরি? শিক্ষক নিয়োগে অডিয়ো ‘ফাঁস’, সুপারিশ পত্র চাইল হাই কোর্ট

চাকরিপ্রার্থিকে বলেন, "২০ লাখ টাকার বিনিময়ে শিক্ষকের চাকরি দেবেন। এ রাজ্য থেকে বিএড করা এমন কেউ চেনাজানা থাকলে জানাবেন।"

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২২ ০১:৫২
Share:

ফাইল চিত্র।

পাশ করেননি পরীক্ষায়! মেধাতালিকায় নাম নেই! নাম ছিল না ওয়েটিং লিস্টেও! তার পরও চাকরি দেওয়া হয়েছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে করা একটি মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার চমকে ওঠার মতো ঘটনা ঘটল কলকাতা হাই কোর্টে। একটি অডিয়ো ক্লিপও শোনানো হল বিচারপতিকে। টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন কি না শিক্ষকের কাছে সেই উত্তর জানতে চাইল আদালত। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চের নির্দেশ, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে নিয়োগপত্র এবং সুপারিশপত্র নিয়ে হাজির হতে হবে ওই শিক্ষককে।

Advertisement

২০১৬ সালে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বসেন গুরুপদ গড়াই। অভিযোগ ওঠে, তিনি পরীক্ষায় ফেল করেও চাকরি পান। গত বছর ভোটের আগে মুর্শিদাবাদের একটি স্কুলে তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। অথচ প্যানেলে তাঁর নাম ছিল না। এর ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয় উচ্চ আদালতে। ১৫ মার্চের শুনানিতে গুরুপদকে তলব করে হাই কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে হাজির হন ওই শিক্ষক। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা জানতে চায় আদালত। বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘আপনি কি মেধাতালিকা বা ওই পরীক্ষার কোনও প্যানেলে ছিলেন?’’ গুরুপদর উত্তর, ‘‘আমার জানা নেই!’’ পরবর্তী প্রশ্ন, ‘‘পরীক্ষা দিয়েছেন, অথচ পরীক্ষায় পাশ করলেন কি না তা দেখলেন না? আবার চাকরিও করছেন। এটা হতে পারে বলুন তো!’’

ওই শিক্ষক বলেন, ‘‘তথ্য জানার অধিকার আইনে (আরটিআই) আমার প্রাপ্ত নম্বর জানতে চেয়েছিলাম। কয়েক দিন পর একটি ফোন আসে। আমাকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) অফিসে যেতে বলা হয়। আমি যাই। সে দিনই ইন্টারভিউ দিয়ে সুপারিশপত্র হাতে পাই। তারিখটা ছিল ২০১৯ সালের ২০ মার্চ।’’ এর পরই গন্ডগোল তৈরি হয় এসএসসি-র মন্তব্যে। তারা আদালতকে জানায়, ওই প্যানেলের মেয়াদ এক দিন আগেই উত্তীর্ণ হয়েছে। ফলে চাকরির সুপারিশ তাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। পর ক্ষণেই শিক্ষকের উদ্দেশে আদালতের প্রশ্ন, ‘‘কত টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন? আপনাকে কে চাকরি দিল?’’

Advertisement

মঙ্গলবার মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম একটি ফোনকলের অডিয়ো ক্লিপ তুলে ধরেন আদালতের কাছে ( যদিও সেই অডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি এবং বিচারপতিও অডিয়োটি শুনানির রেকর্ডে রাখেননি)। সেখানে এক পুরুষ কণ্ঠকে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলতে শোনা যায়। উদাহরণ হিসাবে শোনা যায় গুরুপদর নামও। পুরুষ কণ্ঠটি ফোনে এক মহিলা চাকরিপ্রার্থিকে বলেন, ‘‘২০ লাখ টাকার বিনিময়ে শিক্ষকের চাকরি দেবেন। এ রাজ্য থেকে বিএড করা এমন কেউ চেনাজানা থাকলে জানাবেন।’’ উত্তরে মহিলাটি বলেন, ‘‘এত টাকা তো ঘরবাড়ি বিক্রি করলেও হবে না, কিডনি বিক্রি করতে হবে! তা ছাড়া আমি তো পাশ করেছি। তালিকায় আমার নাম রয়েছে।’’ পাল্টা ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘পাশ করলেও আপনি চাকরি পাবেন না। পরীক্ষায় সাদা খাতা জমা দিলে সব থেকে ভাল হয়। ফেল করলেও চলবে। আমরা এমন অনেকেই চাকরি করে দিয়েছি।’’

মঙ্গলবারের শুনানিতে এমনই সব ঘটনা শুনে হতবাক হাই কোর্ট। বিচারপতি মুর্শিদাবাদ জেলা স্কুল পরিদর্শককে নির্দেশ দেন, অবিলম্বে গুরুপদর বেতন বন্ধ করতে হবে। বুধবার সুপারিশপত্র এবং নিয়োগপত্র নিয়ে আসতে হবে গুরুপদকে। ওই দিন দুপুর ২টো নাগাদ ফের মামলাটি শুনবে আদালত। একই সঙ্গে বিচারপতি জানান, প্রয়োজনে সিআইডিকে এই মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হতে পারে।

আরও পড়ুন:

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement