গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ুয়ার মৃত্যু। —প্রতীকী চিত্র।
সকালবেলা আচমকা জোরালো আওয়াজ। গোটা পাড়া কেঁপে উঠেছিল। গুলির শব্দ চিনতে অসুবিধা হয়নি পাড়া-প্রতিবেশীদের। কোথা থেকে আওয়াজ এল, তার খোঁজ করতে গিয়ে একটি বাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার হয় স্কুলছাত্রের দেহ। পড়শিরা দেখেন, নাবালকের মাথা ফুঁড়ে দিয়েছে বন্দুকের গুলি। গোটা ছাদ রক্তে ভেসে গিয়েছে। নাবালকের দেহের পাশে পড়ে ছিল একটি সেভেন এমএম পিস্তলও!
বৃহস্পতিবার সকালে মালদহের কালিয়াচক থানার জালুয়াবাধাল গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীরামপুর এলাকার ওই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের নাম শামিউল ইসলাম। স্থানীয় একটি হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সে।
পরিবার সূত্রে খবর, সকালে কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলেন শামিউলের বাবা। মা মেয়েকে স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। শামিউল বাড়িতে একাই ছিল। সেই সময় তাদের বাড়ি থেকে বিকট শব্দ শুনতে পান প্রতিবেশীরা। এর পর পড়শিরা গিয়েই শামিউলের দেহ ছাদে পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী। নাবালকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, প্রায় ন’মাস আগে পথ দুর্ঘটনায় জখম হয়েছিল শামিউল। তার মাথায় আঘাত লেগেছিল। তার পর থেকেই মানসিক রোগগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল সে। সর্ব ক্ষণ আতঙ্কে থাকত। রাঁচীতে চিকিৎসাও চলছিল তার। পরিবারের দাবি, চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিয়েছিলেন, শামিউলের যা করতে ভাল লাগবে, তাতে যেন বাধা না দেওয়া হয়। সে রকমই চলছিল। সম্প্রতি মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ে নাবালক। আসক্তি তৈরি হয় সমাজমাধ্যম নিয়েও। কোনও ভাবে রিল তৈরি করতে গিয়ে ওই ঘটনা সে ঘটিয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশের একাংশের অনুমান, বন্দুক নিয়ে খেলতে খেলতে প্রাণ গিয়ে থাকতে পারে শামিউলের। সে ক্ষেত্রে সেভেন এমএম পিস্তলটি সে কোথায় পেল, সেই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। বন্দুকটি পরিবার বা পড়শিদের কারও কি না, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, পড়ুয়াকে কেউ খুন করেছে কি না, সেই প্রশ্নও এখনই উড়িয়ে দিতে পারছেন না তদন্তকারীরা। তবে খুন না কি খেলতে খেলতে পড়ুয়ার মৃত্যু, ময়নাতদন্তে স্পষ্ট হবে বলে মনে করছে পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পর স্পষ্ট হবে খুন না আত্মহত্যা।’’