স্বামী জিতেন্দ্রনাথ মিত্রের সঙ্গে মানসী মিত্র। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
মনের জোরেই করোনা জয় করলেন মেদিনীপুরের মিত্র দম্পতি।
কর্তা জিতেন্দ্রনাথ মিত্র। বয়স ৯৪। গিন্নি মানসী মিত্র। বয়স ৭৯। সংক্রমিত হয়েছিলেন দু’জনেই। হাসপাতালে যেতে হয়নি কাউকেই। বাড়িতে পর্যবেক্ষণে থেকেই সুস্থ হয়েছেন দু’জন। রাজ্যের সহকারী স্বাস্থ্য অধিকর্তা সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, ‘‘মানুষের মন থেকে করোনা সম্পর্কে অযথা উদ্বেগ দূর করতে সচেতনতা-প্রচারে ওঁদের কথা উল্লেখ করব। ওঁদের মানসিক শক্তির কথা সকলের কাছে তুলে ধরলে অনেকে মনে জোর পাবেন।’’
প্রবীণ দম্পতি থাকেন মেদিনীপুরের বিধাননগরে। দুই ছেলে বৌমা, নাতি মিলিয়ে ১০ জনের যৌথ পরিবার। জিতেন্দ্রনাথ কেশপুরের কলাগ্রাম হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ছিলেন। পরিবার সূত্রের খবর, প্রথমে করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন মানসী। পরে সংক্রমিত হন জিতেন্দ্রনাথ। মেদিনীপুর মেডিক্যালের শিশু বিভাগের
বিভাগীয় প্রধান তারাপদ ঘোষ প্রতিবেশী। করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ার পরই তারাপদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন পরিজনেরা। প্রবীণ দম্পতি জানিয়েছিলেন, হাসপাতালে যেতে চান না। তারাপদ জানাচ্ছেন, দু’জনের মধ্যে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মানসীই। তাঁর কাশি বেশি হচ্ছিল। অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছিল। জিতেন্দ্রনাথের সিআরপি-ও এক সময়ে বাড়তে শুরু করেছিল। পরীক্ষা করে স্টেরয়েডও দিতে হয়েছে।
করোনাকে হেলায় হারিয়ে জিতেন্দ্রনাথ, মানসী বলছেন, ‘‘ডাক্তারবাবু আমাদের কাছে ভগবান। প্রতিটি পরামর্শ মেনেছি। ওঁর জন্যই এখনও বেঁচে আছি।’’ তারাপদ বলছেন, ‘‘নিয়ম মানলে বাড়িতে থেকেও যে সুস্থ হওয়া যায়, করোনাকে কাবু করা যায়, সেটা এই বয়সেও জিতেন্দ্রনাথ দেখিয়ে দিয়েছেন। এই ধরনের ঘটনা দৃষ্টান্তই।’’ করোনা- জয়ী জিতেন্দ্রনাথবাবুর আর্জি, ‘‘করোনা টিকা নেওয়া হয়নি। টিকা যদি বাড়িতে এসে দিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে প্রশাসন, খুব ভাল হয়।’’