৯২ বছর বয়সি স্বাধীনতা সংগ্রামীকে স্বীকৃতি দেবে রাষ্ট্রপতি। ছবি: ফাইল চিত্র।
নেতাজির জন্ম তারিখ আর তাঁর জন্ম তারিখ এক। শুধু এই তুচ্ছ মিলই নয়, তার রক্তেও আজন্মলালিত হয়েছে দেশপ্রেম। দেশমাতৃকার ডাকে সাড়া দিতেই ১৪ বছর বয়েসে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগদান। সেই অবদানের জন্যেই এবার রাষ্ট্রপতি সম্মানিত করবেন হুগলির হরিপালের বাসিন্দা ৯২ বছর বয়েসি স্বাধীনতা সংগ্রামী চুনিলাল সিংহ রায়কে।
১৯২৭ সালের ২৩ জানুয়ারি জন্ম চুনিলালবাবুর। ওই বছরই গঠিত হয় সাইমন কমিশন। দেশ জুড়ে ধ্বনি ওঠে ‘গো ব্যাক সাইমন’। প্রবল ব্রিটিশ বিরোধিতার আবহেই বেড়ে ওঠা চুনিলালবাবুর। স্কুলজীবনেই দেশ স্বাধীন করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলা। আন্দোলনের সূত্রেই রাজ্যের রাজ্যের প্রফুল্ল মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র সেনের সান্নিধ্যে আসা।ক্রমে বড় আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন যুবক চুনিলাল।
আজও স্পষ্ট মনে করতে পারেন পুলিশ ক্যাম্প ভাঙচুর, বেলমুড়ি স্টেশনের লাইনের ফিসপ্লেট তুলে দেওয়ার ঘটনা। কর্মকাণ্ড বাড়তে থাকলে পুলিশের নজরে পড়ে যান তিনি। এক দুর্গাপুজার সপ্তমীর ভোরে সশস্ত্র বাহিনী ঘিরে ফেলে তাঁর বাড়ি। গ্রেফতার হন চুনিলাল। হুগলি জেলে কিছুদিন কাটানোর পর অসুস্থতার কারণেতাঁকে গৃহবন্দি রাখা হয় তাঁকে। পরে বাড়ি থেকেও পালিয়ে যান তিনি।দেশ যখন স্বাধীন হচ্ছে চুনিলাল তখন বারাণসীতে রামকৃষ্ণ মিশনের কর্মী। স্বাধীন ভারতের প্রথমপ্রভাতফেরিতে যোগও দেন তিনি। সেই সব আগুন ঝরা দিন আজ অতীত। তবু স্বাধীনতা আন্দোলনের সব স্মৃতি বলতে পারেন অনর্গল। আজও ‘বন্দেমাতারম’শুনে জ্বলজ্বল করে ওঠে তাঁর চোখ, মুষ্টিবদ্ধ হয় হাত। ইন্দিরা জামানায় তাম্রপত্র দিয়ে সম্মানিত করা হয় এই বিপ্লবীকে। তাঁর ৪৭ বছর পরে জুটছে এই সম্মান। ইতিমধ্যে দিল্লি পৌঁছে গিয়েছেন চুনিলালবাবু। স্বাধীনতা সংগ্রামীর এই স্বীকৃতিতে গর্বিত আত্মীয়-পরিজন ও এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন: কিছু জেলার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন কমিশনের