হাওড়ার এই নিঃসন্তান দম্পতির ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে থাকায় পুলিশে খবর দেন প্রতিবেশীরা। প্রতীকী ছবি।
শোওয়ার ঘরে বিছানায় পড়ে বৃদ্ধের পচাগলা দেহ। তার পাশেই বসে রয়েছেন হাঁটাচলায় প্রায় অক্ষম অসুস্থ স্ত্রী। বুধবার দুপুরে হাওড়ার ব্যাঁটরা থানা এলাকার একটি ফ্ল্যাটে এ ভাবেই স্বামীর দেহ আগলে বসেছিলেন রমা ভট্টাচার্য নামে এক বৃদ্ধা। প্রতিবেশীর কাছ থেকে খবর পেয়ে দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কী কারণে এবং কত দিন আগে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন পুলিশ আধিকারিকেরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, ব্যাঁটরার ডুমুরজলা এইচআইটি কোয়ার্টারে ৪০ নম্বর ব্লকের একটি ফ্ল্যাটে স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন প্রাক্তন ব্যাঙ্ককর্মী সমর ভট্টাচার্য (৭৫)। নিঃসন্তান এই দম্পতির দেখাশোনা বা ঘরের কাজকর্মের জন্য কোনও লোকজন ছিল না। বুধবার দুপুরে প্রতিবেশীরাই পুলিশকে খবর দেন।
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, দিন কয়েক আগেও ফ্ল্যাটের বাইরে বেরিয়েছিলেন বৃদ্ধ। তার পর থেকে তাঁকে পাড়ায় দেখা যাচ্ছিল না। বুধবার দুপুরে তাঁর ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে থাকায় পুলিশে খবর দেন।
ডুমুরজলার এইচআইটি কোয়ার্টারে স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন বৃদ্ধ।
খবর পেয়ে সমরের ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে শোয়ার ঘর থেকে তাঁর পচাগলা দেহ। সে সময় সমরের দেহের পাশে বসেছিলেন রমা। তাঁর দেখভালের জন্য দম্পতির আত্মীয়স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। সুমিত পাল নামে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সমরবাবু আগে ব্যাঙ্কে কাজ করতেন। খুবই মিশুকে ছিলেন। ওঁর স্ত্রী অসুস্থ। মানসিক ভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন। সে কারণেই হয়তো স্বামীর মৃত্যুর খবর কাউকে দিতে পারেননি। কিন্তু সমরবাবুর কী ভাবে মৃত্যু হল, তা এখনও জানা যায়নি।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, তৃণমূলের কর্মী ছিলেন সমর। বয়স্কদের একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। বৃদ্ধের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ডিসি (সেন্ট্রাল) শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘এ বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করে জানাতে পারব।’’