পুকুরে গাড়ি, মৃত একই পরিবারের ৭

এঁদের মধ্যে প্রথম ছ’জনের বাড়ি বিষ্ণুপুর থানার দক্ষিণ গৌরীপুর গ্রামে। ফুলজান থাকতেন বিষ্ণুপুর থানার জলিলপুর গ্রামে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০১৯ ০০:১৫
Share:

মর্মান্তিক: পুকুর থেকে তুলে আনা হচ্ছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি। বৃহস্পতিবার সকালে, বিষ্ণুপুরের উচ্ছেখালিতে। —নিজস্ব চিত্র।

পুকুরে গাড়ি উল্টে তিন মহিলা-সহ সাত জন মারা গেলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। সকলেই এক পরিবারের। বৃহস্পতিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে বিষ্ণুপুর থানার উচ্ছেখালিতে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম আলতাব শেখ (২৯), আকাশ আলি শেখ (৪৮), সেলিনা বিবি (৪৫), ইসমাতারা খাতুন (১৮), মুন্নাফ শেখ (৩২), মিরাজ শেখ (১৯) এবং ফুলজান বিবি (৫২)। এঁদের মধ্যে প্রথম ছ’জনের বাড়ি বিষ্ণুপুর থানার দক্ষিণ গৌরীপুর গ্রামে। ফুলজান থাকতেন বিষ্ণুপুর থানার জলিলপুর গ্রামে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন ভোরে আলতাবকে নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে দক্ষিণ গৌরীপুরের বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। আলতাব কর্মসূত্রে কাতারে থাকেন। বুধবার রাতের উড়ানে তিনি দোহা থেকে কলকাতায় নামেন। তাঁকে আনতেই বিমানবন্দর গিয়েছিলেন আত্মীয়েরা। একটি বড় গাড়ি করে সকলে টালিগঞ্জ ফাঁড়ি হয়ে ইএম বাইপাস ধরে আসছিলেন। কয়ালের মোড় থেকে জুলপিয়ার রাস্তায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উচ্ছেখালির কাছে একটি পুকুরে উল্টে পড়ে। কাকভোরে ওই ঘটনার পরে চালক পালিয়ে যান।

ভোরের আলো ফোটার পরে ওই রাস্তা দিয়ে গ্রামের কয়েক জন মহিলা কাজে যাওয়ার সময়ে দেখেন, পুকুরে একটি গাড়ি পড়ে রয়েছে। তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে উদ্ধারকাজে হাত লাগান। খবর পেয়ে আসে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ির দরজা ভিতর থেকে লক করা ছিল। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সাত জনের। আলতাবের দেহ উদ্ধারের পরে তাঁকে চিনতে পারেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই দক্ষিণ গৌরীপুর গ্রামে খবর দেন। খবর পেয়ে চলে আসেন ওই যুবকের পরিবারের অন্য সদস্যেরা।

Advertisement

পুলিশ দেহগুলি উদ্ধার করে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। একই পরিবারের সাত জনের মৃত্যুর ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন। শোকের ছায়া নেমে আসে গ্রামেও। পুলিশ দেহগুলি ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, সারা রাত জেগে থাকার ফলে গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন যাত্রীরা। ফলে চালক পালিয়ে যেতে পারলেও ওই সাত জন গাড়ি থেকে বেরোতে পারেননি। যে কারণে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরে চালকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষ। তাঁদের প্রশ্ন, চালক নিজে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার পরে কেন তিনি যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য উদ্যোগী হলেন না? তিনি যদি যাত্রীদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করতেন, তা হলে হয়তো এ ভাবে সাত জনকে চলে যেতে হত না। পুলিশ অভিযুক্ত চালকের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement