ন’দিনে আটত্রিশ জায়গায় ছড়াল কাটমানি বিক্ষোভ  

রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ প্রতিদিনের ঘটনাগুলি জানিয়ে নবান্নকে সতর্ক করেছে। কিন্তু কী ভাবে এর মোকাবিলা করা হবে, তার কোনও দিশা সরকার জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে জানাতে পারেনি বলে নবান্ন সূত্রের খবর।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৯ ০৩:২৩
Share:

কাটমানি ইস্যুতে বিধানসভায় বিরোধী দলের প্রতিবাদ।—ছবি পিটিআই।

৯ দিনে ৩৮!

Advertisement

গত ১৮ থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কাটমানি ফেরতের দাবিতে ৩৮টি স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। জেলা থেকে পুলিশ ডাইরেক্টরেটে এমনই রিপোর্ট জমা পড়েছে। তা জেনেছেন নবান্নের স্বরাষ্ট্র কর্তারাও। তার পরেও কাটমানি চেয়ে বিক্ষোভের ঘটনা এখনও থামছে না, বরং বাড়ছে এবং ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে চিন্তায় পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র দফতর।

তবে রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ প্রতিদিনের ঘটনাগুলি জানিয়ে নবান্নকে সতর্ক করেছে। কিন্তু কী ভাবে এর মোকাবিলা করা হবে, তার কোনও দিশা সরকার জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে জানাতে পারেনি বলে নবান্ন সূত্রের খবর। দিন কয়েক আগে রাজ্য পুলিশের এডিজি(আইন-শৃঙ্খলা) জ্ঞানবন্ত সিংহ জানিয়েছিলেন, কাটমানি সম্পর্কিত অভিযোগ এলে সরকার জেলা প্রশাসনের কাছে প্রাথমিক তদন্তের জন্য পাঠাবে। পাশাপাশি ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় অর্থ তছরূপের মামলাও করবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত উত্তর দিনাজপুর ছাড়া আর কোথাও এ ধরনের অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে না বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

ফলে জেলায় জেলায় গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ চলছেই। পুলিশ জানাচ্ছে, গত ৯ দিনে ১০টি জেলায় কাটমানি-বিক্ষোভ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বিক্ষোভ হয়েছে হুগলি,বীরভূম এবং পূর্ব বর্ধমানে। পুলিশের একাংশ জানাচ্ছেন, হুগলির তিনটি লোকসভা আসনের মধ্যে দু’টি এবারও তৃণমূল দখল করেছে। বীরভূমের দুটি এবং পূর্ব বর্ধমান আসনটিও তৃণমূল জিতেছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বলার পর কাটমানি চেয়ে ক্ষোভ সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে এই তিনটি জেলায়। নবান্নের শীর্ষ কর্তাদের মতে, ‘‘খুবই চিন্তার বিষয়। কারণ, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, নদিয়া, কোচবিহার, মালদহের মতো জেলায় বিজেপি জিতলেও কাটমানি বিক্ষোভ তুলনায় কম। যদি সংগঠিত ভাবে সেখানেও জনপ্রতিনিধিদের বাড়ি ঘেরাও করে টাকা ফেরত চাওয়া শুরু হয়, তা সামাল দেওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়াতে পারে।’’

পুলিশ জানাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত কোচবিহার, মালদহ, পশ্চিম বর্ধমান, হাওড়াতে একটি করে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু যে কোনও সময় বিক্ষোভ আরও ছড়াতে পারে। রাজ্য গোয়েন্দা কর্তাদের একাংশের মতে, মুখ্যমন্ত্রী ১৬ জুন কাটমানি ফেরত দিতে বলেছিলেন। ১৮ জুন থেকে নেতাদের ঘেরাও করে

বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বীরভূমের চাতরা গ্রামের নেতা ত্রিলোচন মুখোপাধ্যায় ১৪১ জন গ্রামবাসীকে ১৬৪১ টাকা করে মোট ২ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা গত ২৫ জুন ফেরত দিয়েছেন। এর পর থেকেই জেলায় জেলায় বিক্ষোভের সুর আরও চড়েছে। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, এখনও টাকা চাওয়ার ঘটনা মূলত গ্রামীণ নেতাদের ঘিরে শুরু হয়েছে। গ্রাম থেকে শহরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে টাকা ফেরতের দাবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement