রুনু বিশ্বাস
কলকাতা এবং শহরতলিতে ডেঙ্গি-মৃত্যুর তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। বাঙুর ও বিধাননগরের পরে মঙ্গলবার কলকাতার তিন প্রান্তে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে ওই রোগে। বর্ষা-শরৎ পার করে ভরা হেমন্তে ডেঙ্গির দাপট আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়।
বাগুইআটির রুনু বিশ্বাসের (২৮) মৃত্যু স্তম্ভিত করে দিয়েছে পরিচিতদের। ১১ দিন আগে জ্বরের মধ্যে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল রুনু। মূলত জ্বরের জন্যই অস্ত্রোপচার করে ৩৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা রুনুর প্রসব করানো হয়। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এখন জ্বর তো, মেয়েকে ধরব না। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে তো ওর সঙ্গেই খেলব।’’
প্রসবের পরে অবস্থার অবনতি হয় আমহার্স্ট স্ট্রিট মহিলা থানায় কর্মরত রুনুর। রক্তে প্লেটলেট ৬৫ হাজারে নেমে যায়। ২৯ অক্টোবর ভিআইপি রোড সংলগ্ন নার্সিংহোম থেকে তাঁকে ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মঙ্গলবার শেষ রাতে সেখানেই মারা যান তিনি। তাঁর স্বামী, পুলিশকর্মী অনুপ সরকারের অভিযোগ, ‘‘ভিআইপি রোডের হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতি হয়েছে।’’ ওই হাসপাতাল অবশ্য বিবৃতি দিয়ে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। রুনুর মেয়ে সুস্থ বলে জানান চিকিৎসকেরা।
আরও পড়ুন: ‘নাতনি দু’টোকে পোড়াল কেন!’
পাসপোর্ট করিয়েও চাকরি করতে সৌদি আরব যাওয়া হল না নৈহাটির হাজিনগরের যুবক কৃষ্ণগোপাল অধিকারীর (২৫)। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। গত সপ্তাহে জ্বরে আক্রান্ত হন মেক-আপ শিল্পী কৃষ্ণগোপাল। মঙ্গলবার তাঁর রক্তে প্লেটলেট-সংখ্যা নেমে যায় চার হাজারে। সন্ধ্যায় নাকমুখ দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে। মৃত্যু হয় কিছু ক্ষণের মধ্যেই। অভিযোগ, নৈহাটি ছাড়াও ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে পাশের ভাটপাড়া, হালিশহর, কাঁচরাপাড়ায়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আন্দুল রোডের এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় কেয়া গোস্বামী (২৬) নামে এক যুবতীর। তাঁর বাড়ি হাওড়ার চ্যাটার্জিহাট-চারাবাগানে। পরিবার জানায়, ২৯ অক্টোবর জ্বর শুরু হয় কেয়ার। রক্তপরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ে। এই নিয়ে এ বার হাওড়ায় ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল চার।