ধৃত তিন জঙ্গি। নিজস্ব চিত্র
বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের সূত্রে বাংলাদেশে গ্রেফতার হল আরও তিন সন্দেহভাজন জঙ্গি। ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের দাবি, ধৃতেরা মায়ানমারের রোহিঙ্গিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ এবং তারা আগে পশ্চিমবঙ্গেই আত্মগোপন করেছিল। বর্ধমান বিস্ফোরণের পরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। ভারতে ধৃত খালিদ মহম্মদই এই জঙ্গিদের নেতা।
বর্ধমান কাণ্ডের সঙ্গে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিনের যোগ স্পষ্ট হতেই ঢাকার সঙ্গে এই বিষয়ে তথ্য আদানপ্রদান শুরু করে নয়াদিল্লি। সম্প্রতি বাংলাদেশে একটি দল পাঠিয়েছিল এনআইএ। পরে বাংলাদেশি গোয়েন্দাদের দল ভারতে আসে। খাগড়াগড় কাণ্ডের মূল মাথা হিসেবে পরিচিত সাজিদ বাংলাদেশি। এনআইএ-র সঙ্গে তথ্য আদানপ্রদানের মধ্যেই বাংলাদেশে পাঁচ জন জামাতুল জঙ্গি গ্রেফতার হয়। বাংলাদেশ পুলিশের দাবি, ধৃতদের মধ্যে রয়েছে সাজিদের স্ত্রী ও জামাতুল মুজাহিদিনের মহিলা শাখার প্রধান ফতেমা।
কিন্তু মায়ানমারের নাগরিক খালিদ মহম্মদ এনআইএ-র হাতে ধরা পড়ার পরে জঙ্গি জালের ব্যাপকতা সম্পর্কে গোয়েন্দাদের ধারণা বদলে যায়। তাঁদের দাবি, রোহিঙ্গিয়া সম্প্রদায়ের সদস্য খালিদের সঙ্গে কেবল জামাতুল মুজাহিদিন নয়, তালিবান-আল কায়দারও যোগ রয়েছে। এ বার বাংলাদেশে আরও তিন রোহিঙ্গিয়া জঙ্গির গ্রেফতারি জঙ্গি-জালের ব্যাপকতা নিয়ে গোয়েন্দাদের ভাবনা আরও বাড়াল বলে মনে করা হচ্ছে।
ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় জানান, কাল রাতে ঢাকার লালবাগে এতিমখানা মোড় থেকে ওই তিন জন গ্রেফতার হয়েছে। বছর ছাব্বিশের নুর হোসেন ওরফে রফিকুল ইসলাম, বছর বাইশের ইয়াসির আরাফত ও বছর পঁচিশের ওমর করিম কয়েকটি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পড়াশোনার আড়ালে তারা জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত ছিল। ভারতে ধৃত খালিদ মহম্মদের সঙ্গে তাদের যোগ রয়েছে।
বর্ধমান বিস্ফোরণের পরে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশি জঙ্গিদের গতিবিধি নিয়ে তথ্য মিলেছিল। খালিদ মহম্মদও রাজ্যের কয়েকটি এলাকায় গিয়েছিল বলে জানান গোয়েন্দারা। আজ ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, নুর হোসেন, ইয়াসির আরাফত ও ওমর করিমও পশ্চিমবঙ্গে আত্মগোপন করেছিল। বর্ধমান বিস্ফোরণের পরে তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তিন জনেই জামাতুল মুজাহিদিনের সদস্য। রোহিঙ্গিয়া জঙ্গিদের সঙ্গেও তাদের যোগ রয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে ৫টি ডিটোনেটর ও কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। রোহিঙ্গিয়া জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানে অন্য সাফল্যও পেয়েছে বাংলাদেশ। গত সপ্তাহে চট্টগ্রামের রোহিঙ্গিয়া জঙ্গি নেতা ছালামতউল্লাহ ও কিছু সহযোগীকে আটক করা হয়। শনিবার মায়ানমারে পালানোর পথে তার আত্মীয় হাফেজ জুনাইদও গ্রেফতার হয়। গোয়েন্দাদের দাবি, গত বছর বাংলাদেশের রামু এলাকায় বৌদ্ধ ধর্মস্থানে হামলার মূল পাণ্ডা ছিল জুনাইদ।