Books

‘অদৃশ্য’ ২৯ কোটি টাকার বই, প্রকাশকেরা আশঙ্কায়

কলেজ স্ট্রিটের প্রকাশকদের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূল আমলে প্রকাশকদের থেকে পাঠ্য বই কেনা অনেক কমেছে। স্কুল স্তরের বেশিরভাগ বই রাজ্য নিজেই প্রকাশ করে।

Advertisement

ঋজু বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৬:০৪
Share:

—প্রতীকী ছবি।

গত মাসেই বইমেলায় সব মিলিয়ে ২৮-২৯ কোটি টাকার বই বিক্রির কথা ঘোষণা করেছিলেন আয়োজকেরা।

Advertisement

অন্য একটি খাতে ২৯ কোটি টাকার বিপুল অঙ্ক নিয়েই রাজ্যে প্রকাশকেরা নাজেহাল। কেন্দ্রীয় প্রকল্পে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল গ্রন্থাগারের জন্য প্রাপ্ত ওই ২৯ কোটি টাকায় বিপুল সংখ্যক বই কেনায় উদ্যোগ পাঁচ বছর ধরে থমকে। ফলে ওই টাকার পরিণতি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

প্রাক্-কোভিড যুগে পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৯-এর ১৭ জুন স্কুল শিক্ষা কমিশনারের তরফে একটি নির্দেশিকা বেরোয়। তাতে বিভিন্ন স্কুলের গ্রন্থাগারের জন্য বই বাছাই করতে বিভিন্ন প্রকাশককে নমুনা জমা দিতে বলা হয়। কেন্দ্রীয় ওই প্রকল্পে সরকারি এবং সরকার পোষিত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলির গ্রন্থাগারের জন্য নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির উপযোগী বই কেনায় হাত দেওয়া হয়। তোড়জোড় শুরু হয় বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু, নেপালি, সাঁওতালি ভাষায় বই কেনার। এর কিছু দিনের মধ্যেই বইয়ের নমুনা নিয়ে কলেজ স্ট্রিটের হিন্দু স্কুলে জড়ো হন প্রকাশকেরা। অন্তত ৩০০ জন প্রকাশক কম-বেশি ৩০ লক্ষ টাকার বইয়ের নমুনা জমা দিয়েছিলেন।

Advertisement

বই জোগাড়, বাছাই এবং কেনাকাটির জন্য রাজ্য স্তরের কমিটিও গড়া হয়েছিল। তাতে বইমেলার গিল্ড কর্তা, প্রকাশক সুধাংশুশেখর দে, সিলেবাস কমিটির তৎকালীন কর্তা তথা অধ্যাপক অভীক মজুমদারেরা ছিলেন। অথচ পাঁচ বছর গড়ালেও কোনও বই-ই কেনা হয়নি।

কলেজ স্ট্রিটের প্রকাশকদের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূল আমলে প্রকাশকদের থেকে পাঠ্য বই কেনা অনেক কমেছে। স্কুল স্তরের বেশিরভাগ বই রাজ্য নিজেই প্রকাশ করে। কেন্দ্র ও রাজ্যের মিলিত অনুদানে চলা রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফান্ডের টাকাতেও বছর বছর কয়েক কোটি টাকার বই কেনার কথা। তা-ও এখন অনিয়মিত। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের ২৯ কোটি টাকার প্রকল্পটিতে যেন অক্সিজেন পেয়েছিল প্রকাশককুল। রাজ্যের প্রকাশনা ব্যবসার ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় তাঁরা ওই ২৯ কোটির পথ চেয়ে ছিলেন।

বই সংক্রান্ত সরকারি কমিটির সদস্যেরা বলছেন, “সাহিত্য, নানা বিষয়ে জ্ঞান, বিজ্ঞানের বই বাছাই কবেই মিটে গিয়েছিল। হয়তো কোনও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় বই কেনা আটকে।” প্রকাশকদের অনুরোধে সুধাংশুও বই কেনার বিষয়ে খোঁজ করেছেন। উদ্বিগ্ন প্রকাশকদের কাছে ধারাবাহিক ভাবে ‘এই তো বই কেনা হবে’ গোছের সরকারি আশ্বাস এসেছে। রাজ্যের শিক্ষা সচিব শুভ্র চক্রবর্তীরও আশ্বাস, “বই শিগগিরই কেনা হবে।” তবে কবে তা স্পষ্ট নয়। শুভ্র বলছেন, “অনেক পুরনো তহবিল। তা সক্রিয় করার পদ্ধতি থাকে। একটু সময়সাপেক্ষ। হতে পারে মার্চের শেষে হাতে কী টাকা আছে দেখে ছাড়া হল।”

খাতায়-কলমে প্রকাশনাকে শিল্পের মর্যাদা দিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বই রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতর তাও নিয়মিত কেনে বলে সূত্রের খবর। কিন্তু স্কুল পাঠ্য বই বা রাজ্যে বিভিন্ন গ্রন্থাগারের জন্য বই কেনা কোনও মতে চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement