সরকারি জমি দখল করে গজিয়ে উঠছে একের পর এক বেসরকারি লজ এবং হোটেল। তবুও প্রশাসনের কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। শীত পড়তেই সুন্দরবনে শুরু হয়ে গিয়েছে পর্যটকদের আনাগোনা। এই সময়ে ওই জমিতে যদি সরকারি লজ গড়ে উঠত তা হলে এলাকার লোকজনদের ব্যবসা পত্র ভাল হত বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। এতে সুন্দরবন এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি হতে পারত হলে দাবি এলাকাবাসীর।
অভিযোগ, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে এই সমস্ত হোটেলগুলিতে চলছে অবৈধ ব্যবসা। ক্যানিংয়ের এক পর্যটক ব্যবসায়ী বলেন, “সুন্দরবন বেড়াতে যাবে বলে একদল পর্যটন শিলিগুড়ি থেকে রাতের ট্রেনে ক্যানিংয়ে আসেন। ওই পর্যটক দলটির জন্য অনেক চেষ্টা করে ক্যানিংয়ে মাত্র দুটি ঘরের ব্যবস্থা করতে পেরেছিলাম। কারণ এখানে বেশিরভাগ হোটেলই ঘন্টা পিছু ঘর ভাড়া দেয়। তাও আবার কাপেলদের জন্য।” ক্যানিংয়ে একটি রাত কাটানোর জন্য বেশ ভুগতে হয়েছিল ওই দলটিকে বলে অভিযোগ পর্যটন ব্যবসায়ীর।
বাসিন্দারা জানায়, এই সুযোগ নিয়েই বিভিন্ন জায়গা থেকে ছেলেমেয়েরা এখানে আসে। ঘন্টা খানেক থেকে আবার চলে যায়। অতীতে পুলিশি অভিযানে ওই হোটেল বা লজগুলি থেকে অনেক স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারাও ধরা পড়েছে বলে জানান বাসিন্দারা। এ বিষয়ে যদি প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নেয় তা হলে হোটেলগুলির অবৈধ ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।
কী বলছেন এই হোটেলগুলির ব্যবসায়ীরা?
ক্যানিংয়ে হোটেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এক ব্যবসায়ী বলেন, সাধারণত কাউকে ঘর ভাড়া দেওয়ার আগে আমরা পরিচয়পত্র দেখে নিই। তবে স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েদের কখনও ঘরভাড়া দেওয়া হয় না।
এ প্রসঙ্গে ক্যানিং ১ ব্লকের বিডিও বুদ্ধদেব দাস বলেন, “কোন হোটেলে কত দেশি-বিদেশি পর্যটক আসেন সেই হিসেবে জেলা পর্যটন দফতর থেকে আমাদের কাছে চাওয়া হয়। কিন্তু ক্যানিংয়ে কোথায় কত হোটেল আছে তা সরকারি ভাবে আমাদের কাছে নথিভুক্ত না থাকায় আমরা জানতেও পারি না কোন হোটেল লজে কী ধরনের পর্যটক বা বহিরাগতরা এসে থাকেন। এখন যে ভাবে জঙ্গিরা যেখানে সেখানে ঘাটি বাঁধছে। সেখানে এই সমস্ত হোটেলগুলিতে তারা প্রবেশ করতেই পারে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল। যদিও পুলিশের দাবি ওই সমস্ত হোটেগুলিতে সব সময় পুলিশি নজরদারি চালানো হয়। এ প্রসঙ্গে মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য বলেন, “বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। যদিও এ বিষয়ে আমাকে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে শীঘ্রই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।”