সিপিএমের কর্মিসভায় বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান।
নামে কর্মিসভা। কিন্তু সেখানেই হাজার দু’য়েক লোকের জমায়েত করে তাক লাগিয়ে দিল বামফ্রন্ট। ইদানীং উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নানা প্রান্তে বামেদের সভায় লোকের সংখ্যা যে বাড়ছে, তাতে স্পষ্টতই খুশি জেলা নেতৃত্ব। এর আগে কলকাতায় নবান্ন অভিযানের সাফল্যে ভর করে আজ, মঙ্গলবার বারাসতে উদ্বাস্তুদের নিয়ে বড়সড় সভার ডাক দিয়েছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম দেব। সেখানে ৮০ হাজার লোক জমায়েত হবে বলে বার বারই বলছেন তিনি।
সোমবার বাগদার হেলেঞ্চা উচ্চ বলিকা বিদ্যালয়ের কর্মিসভায় এসেছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। সঙ্গে ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা হরিপদ বিশ্বাস, সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, বনগাঁ উপনির্বাচনের প্রার্থী দেবেশ দাস, সিপিএম নেতা কান্তি বিশ্বাস প্রমুখ। মতুয়া-ভোটার অধ্যুষিত বনগাঁ মহকুমায় কর্মিসভায় এসে স্বভাবতই বিমানবাবু মতুয়াদের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বলেন, “মতুয়া মহাসঙ্ঘের মধ্যে তৃণমূলই প্রথমে রাজনীতির চোরাবালি ঢুকিয়েছে। নতুন আদলে বিজেপিও চোরাবালি ঢুকিয়েছে।” তবে নিজেদেরও মতুয়া-ঘনিষ্ঠ প্রমাণের চেষ্টাও যে একেবারে ছিল না বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের, তা-ও নয়। যখন তিনি বলেন, “হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরকেও (মতুয়াদের ধর্মগুরু) সেলাম করা উচিত। শ্রীচৈতন্য, রামমোহন, বিদ্যাসাগরদের মতো ওঁরাও ছিলেন সমাজ সংস্কারক। গুরুচাঁদ শিক্ষার প্রসারে মহান ব্রত পালন করেছিলেন। সে সব ভুলে যাওয়া উচিত নয়। সব কিছু নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়।”
মতুয়া প্রসঙ্গে ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা হরিপদ বিশ্বাস (যিনি নিজেও মতুয়া) বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নটোরিয়াস (ভয়ঙ্কর) মহিলা। মতুয়াদের ঘরে আগুন দিয়ে দিয়েছেন। মতুয়াদের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে সব ভেঙে দিয়েছেন। আগামী পঞ্চাশ বছরেও মতুয়ারা আর উঠে দাঁড়াতে পারবে কিনা সন্দেহ।” হরিপদবাবুর দাবি, কপিলকৃষ্ণ অসুস্থ অবস্থায় দিল্লির হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময়ে তৃণমূলের কেউ ওঁকে দেখতে যাননি। কিন্তু তিনি গিয়েছিলেন।
বিজেপি প্রার্থী সুব্রত কিংবা সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া তাঁর বাবা মঞ্জুল ঠাকুর মতুয়াই নন বলেও কটাক্ষ করেছেন প্রাক্তন বাম বিধায়ক। তিনি বলেন, “ওঁদের হাত থেকে মতুয়াদের লাল নিশান কেড়ে নিতে হবে।”
রাজ্যে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক নারী নিগ্রহের প্রসঙ্গ টেনে বিমানবাবু জানান, নারী নিগ্রহের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণবঙ্গের ১৩টি জেলাকে নিয়ে কলকাতায় মিছিল হবে।