পেশোয়ার কাণ্ডের প্রতিবাদে কংগ্রেসের মিছিল বসিরহাটে। ইনসেটে, আরও মিছিল বসিরহাট-ক্যানিংয়ে।
কোথাও নীরবে, কোথাও স্লোগান তুলে মিছিলে সরগরম হয়ে রইল বসিরহাট, দেগঙ্গার পথঘাট। মিছিলে নামে ক্যানিংয়ের রাস্তাতেও।
পাকিস্তানের সেনা স্কুলে শিশুদের উপরে জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে আইনজীবী এবং কংগ্রেসের দু’টি মৌনী মিছিল হল বসিরহাটে। তৃণমূলের মহিলা সমিতির তরফেও একটি মিছিল হয় ক্যানিংয়ে।
অন্য দিকে, তাঁদের দলের নেতাদের নামে কুৎসা ও অপপ্রচারের অভিযোগ তুলে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের দু’টি মিছিল হয়েছে বসিরহাট ও দেগঙ্গায়। শুক্রবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত এর জেরে যানজটে আটকা পড়তে হয় সাধারণ যাত্রী এবং পথচারীদের।
এ দিন দুপুরে ব্যানার ও পোস্টার হাতে বসিরহাট আদালত চত্বর থেকে শুরু হয়ে মৌনী মিছিল। তাতে সামিল হন আইনজীবী, ল-ক্লার্ক, টাইপিস্ট এবং আদালত চত্বরের দোকানের কর্মীরা। শহর প্রদক্ষিণ করে আদালত চত্বরে এসে পেশোয়ারে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। মিছিলের উদ্যোক্তা বসিরহাটের ফৌজদারি বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, “মানবতার চরম শত্রুরা ধ্বংস হোক। বিচ্ছিন্নতাবাদ, সন্ত্রাসমুক্ত সুস্থ ও সুন্দর পৃথিবীতে শিশুরা বেড়ে উঠুক।” সন্ধ্যা নাগাদ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের পক্ষে বসিরহাটের কাছারিপাড়ায় বিবেকানন্দের মূর্তির সামনে থেকে মোমবাতি হাতে মিছিলে পা মেলান অনেকে। তাঁদের মধ্যে কংগ্রেসের কাউন্সিলরেরাও ছিলেন। সংশোধনাগারের সামনে দিয়ে ইটিন্ডা রাস্তা ধরে মিছিলটি টাউনহল চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পেশোয়ারের ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন সকাল ১০টা থেকে ঘণ্টা খানেক ধরে ক্যানিং বাসস্ট্যান্ড থেকে বাজার হয়ে শহর পরিক্রমা করে তৃণমূলের মহিলা সমিতি আয়োজিত একটি ধিক্কার মিছিল বেরোয়। মিছিল শেষে পথসভায় বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করেন ক্যানিং পশ্চিম-এর বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল, ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পরেশরাম দাস। সেই সঙ্গে শ্যামলবাবু মদন মিত্রের গ্রেফতারের প্রতিবাদেও বক্তব্য রাখেন।
অন্য দিকে, এ দিন বিকেলে টাউনহল চত্বর থেকে তৃণমূলের এক বিশাল মিছিলে অংশ নেন ফুটবলার দীপেন্দু বিশ্বাস, অলোক দাস, তপন ঘোষ-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপির কথাতেই সিবিআই তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করছে, এমন দাবি জানিয়েই তাঁদের এ দিনের প্রতিবাদ। পোস্টার, ফেস্টুন নিয়ে মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ করে। দীপেন্দু বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কাজ দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে কেবল মাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিজেপি সিবিআইকে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে উস্কাচ্ছে। সময় মতো মানুষ এর যোগ্য জবাব দেবেন।” একই দাবিতে কয়েক হাজার মানুষ নিয়ে মিছিল করেন দেগঙ্গার তৃণমূলের বিধায়ক নুরুজ্জামান। মিছিল শেষে পথসভায় তিনি বলেন, “বামফ্রন্টের সময়ে রাজ্যে বেড়ে ওঠা চিট ফান্ডগুলির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতর-সহ সিপিএম নেতাদের না ধরে তৃণমূল মন্ত্রীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।”
সারা দিন ধরে একাধিক মিছিলের কারণে টাকি রাস্তা অবরুদ্ধ হয়। তীব্র যানজটে বহু মানুষ নাজেহাল হন।