প্রায় ৪৭ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। তহবিল আপাতত শূন্য। অথচ ডায়মন্ড হারবার রবীন্দ্রভবন মেরামতি এখনও অসমাপ্ত।
নতুন করে আরও দ্বিগুণ টাকা চেয়ে রাজ্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে চলেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ। দীর্ঘ সময় ধরে শহরের এক মাত্র সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র সারাইয়ের জন্য আটকে পড়েছে নাটক, স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠান, নাচ এবং গানের নানা অনুষ্ঠান। কবে কাজ শেষ হবে তার অপেক্ষায় মহকুমার সংস্কৃতিপ্রেমীরা।
মহকুমায় অন্য কোনও বড় মঞ্চ না থাকার জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এক মাত্র ভরসা ডায়মন্ড হারবার রবীন্দ্রভবন। ভবন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচিত সদস্যদের সংস্থা মহকুমা রবীন্দ্র পরিষদের হাতে। কিন্তু সংস্থাকে প্রায় অন্ধকারে রেখে গত ফেব্রুয়ারি থেকে ভবন সারানোর কাজে হাত দিয়েছিল জেলা পরিষদ। ছ’মাসে সেই কাজের অর্ধেকও শেষ হয়নি।
রবীন্দ্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রনেন্দ্রবিকাশ শাসমল বলেন, “ঠিক কী কী কাজ হচ্ছে, কবে শেষ হবে তা জানি না। তবে এটুকু বলতে পারি, এর জন্য আমাদের সমস্ত অনুষ্ঠান, নাটক আটকে পড়েছে, প্রতি মাসে বিশাল আর্থিক ক্ষতিও বহন করতে হচ্ছে।”
হল বন্ধ থাকায় প্রতি মাসে কর্মীদের মাইনে, ইলেকট্রিক বিল, অন্যান্য খরচ বাবদ একটি বড় টাকা চলে যাচ্ছে পরিষদের তহবিল থেকে। ভাড়া বাবদ যে টাকা আয় হত, তা বছরে প্রায় দেড় লক্ষ মতো। তা-ও এখন বন্ধ। ২৫ শে বৈশাখ, ২২ শে শ্রাবণ মিলিয়ে বছরে অন্তত ১৫টি অনুষ্ঠান করে রবীন্দ্র পরিষদ। কিন্তু শম্ভু মিত্রের জন্ম শতবর্ষ পালন, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের স্মরণসভা বা নজরুল জয়ন্তী, কিছুই করা যায়নি এ বছর। পরিষদের দু’টি নতুন নাটকও মঞ্চের অভাবে অভিনীত হতে পারছে না।
কেবল মাত্র রবীন্দ্র পরিষদই নয়। ডায়মন্ড হারবার শহর-সহ মহকুমার স্কুল, ক্লাব, নাট্যগোষ্ঠী, স্বাস্থ্য সচেতনতার শিবিরসব মিলিয়ে প্রায় ২০-২৫টি সংস্থার সারা বছরের অনুষ্ঠানের জন্য এই ভবনের বিকল্প নেই। পাঠভবন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শিলা সেন বলেন, “স্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য হন্যে হয়ে অন্য জায়গা খুঁজতে হয়েছে। তাতে অনেক বেশি টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে।”
ডায়মন্ড ক্লাব অ্যান্ড লাইব্রেরি বছরে দু-একটি নাটক মঞ্চস্থ করে। ওই গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত নাট্যকর্মী মৌসুমী মিত্র বলেন, “শহরের এক মাত্র নাট্যচর্চাকেন্দ্র রবীন্দ্রভবন এত দিন ধরে বন্ধ থাকায় আমরা পূর্ণাঙ্গ নাটক মঞ্চস্থ করতে পারছি না। ছটফট করছি, কবে হল সংস্কারের কাজ শেষ হবে।”
কবে ঘটবে অপেক্ষার অবসান?
জেলা পরিষদের তরফে কাজ কবে শেষ হবে তা জানাতে পারছেন না কর্মকর্তারা। সভাধিপতি শামিমা শেখ বলেন, “রবীন্দ্রভবনের যা দশা হয়েছিল, তার উপর জোড়াতালি দিলে অনেক আগেই কাজ শেষ হয়ে যেত। আমরা চাইছি ভবনের আমূল সংস্কার করতে। গত সপ্তাহেও এটা নিয়ে বৈঠক করেছি। একটু সময় লাগবে।”