এই দশা ভবনের।—নিজস্ব চিত্র।
যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে পঞ্চায়েত অফিসের দোতলা ভবনটি। এ নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে কাজ করতে হচ্ছে ক্যানিং ১ ব্লকের মাতলা ১ পঞ্চায়েতের সদস্যদের। ইতিমধ্যেই দোতলা ভবনটির নীচ থেকে ছাদ পর্যন্ত বিরাট ফাটল ধরে দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। কর্মীদের এক দিক থেকে সরিয়ে অন্য এক দিকে এনে বসানোর ব্যবস্থা হয়েছে।
১৯৯৮ সালে প্রাক্তন প্রধান প্রফুল্ল মণ্ডলের আমলে আনুমানিক ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল বলে পঞ্চায়েত সূত্রের খবর। অভিযোগ, সে সময় তড়িঘড়ি করে ভবন নির্মাণ হয়েছিল। সামনে ভোট ছিল বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করেই ওই ভবনটি হয়েছে।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই এলাকায় নলপুকুর নামে প্রায় ৭ বিঘা সরকারি খাস জমি রয়েছে। তারই একটি অংশে বাজার-সংলগ্ন রাস্তার গায়ে ওই পঞ্চায়েত অফিস নির্মাণ করা হয়েছিল। অভিযোগ, সে সময় জমি অধিগ্রহণের পরে যদি নিয়ম মেনে পরিকল্পনা করে কাজ করা হত, তা হলে এখন এই ভবনটির এমন দুর্দশা হত না। সেই জমি দখল করেই তৈরি হচ্ছে ঘরবাড়ি। অথচ ওই জমিগুলিতে অনায়াসে পার্ক বা কোনও বিনোদনের জায়গা গড়ে তোলা যায় বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
সিপিএমের কৃষকসভার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দুলাল ঘোষ বলেন, “আমাদের সময় মাতলা ১ পঞ্চায়েতের কার্যালয় তৈরির জন্য কোনও জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষমেশ ওই জমিটির সন্ধান পাই। আমাদের তেমন ফান্ড না থাকায় ওই জমির কিছুটা অংশে মাটি ফেলে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল।”
বর্তমান মাতলা ১ পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান তপন সাহা বলেন, “পঞ্চায়েত ভবনটির যা অবস্থা তাতে যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। অনেকেই আতঙ্কে ওই অফিসে বসে কাজ করতে চাইছেন না। আমি সমস্ত বিষয়টি মহকুমাশাসক ও জেলাতে জানিয়েছি।” অফিস-সংলগ্ন যে জমিটি পড়ে রয়েছে, তাতে পার্ক তৈরি করতে ইচ্ছুক তপনবাবু। তবে এতে বাসিন্দাদের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি জানান। মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য বলেন, “আমি ওই পঞ্চায়েত ভবনটির অবস্থা সরেজমিনে দেখে এসেছি। ওই পঞ্চায়েতকে বলেছি সমস্ত কাগজপত্র তৈরি করে প্রস্তাবিত খরচের হিসেব দিতে। সেই মতো আমি সংশ্লিষ্ট দফতরকে পাঠিয়ে দেব।”