মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হল দেগঙ্গার হাদিপুর-ঝিকরা ১ পঞ্চায়েতের পশ্চিম হাদিপুর গ্রামের মোল্লাপাড়ার আরিফ মোল্লার পরিবারকে। শুক্রবার নগদ ২০ হাজার টাকা পরিবারটির হাতে তুলে দেন বসিরহাটের সাংসদ ইদ্রিস আলি। এক কুইন্ট্যাল চাল, ৫০ কেজি দম এবং পরিবারের সকলের জন্য নতুন পোশাক দেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আরিফদের নতুন বাড়ি, পানীয় জলের কল এবং বাথরুম করে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
এ সবে খুশি আরিফ ও তাঁর স্ত্রী মিনু। বললেন, “ছেলেটা আমাদের ঘরে ফরিস্তা হয়ে এসেছে। তা না হলে কি অভাবের তাড়নায় টাকার বিনিময়ে ওকে অন্যের হাতে তুলে দিয়েও ফিরে পাই? ও তো আমাদের জীবনটাই বদলে দিয়েছে।” গর্বিত মায়ের কথায়, “ছেলেটার জন্য আমাদের গাঁয়েরও ভাগ্য খুলে গিয়েছে।” বস্তুত, নাসিরউদ্দিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই প্রচারের আলো এখন গ্রামে। কাঁচা রাস্তায় সুরকি পড়েছে। মোল্লাপাড়া থেকে হাদিপুর স্কুল বাড়ি পর্যন্ত মাত্র আধ কিলোমিটার চরম বেহাল। সেই রাস্তার টেন্ডার ডাকা হয়েছে।
গত শুক্রবার আরিফের স্ত্রী মিনু বিবি পঞ্চম সন্তানের জন্ম দেন। অভাবের সংসারে দুধের শিশুকে কী ভাবে বাঁচাবেন, ভেবে পাচ্ছিলেন না তাঁরা। কিছু টাকা এবং নতুন পোশাকের বিনিময়ে ছেলেকে তুলে দিয়েছিলেন অন্য পরিবারের হাতে। সেই খবর আনন্দবাজারে প্রকাশিত হওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন আরিফরা। অভাবী পরিবারে শিশু বিক্রির কথা জানতে পেরে গ্রামের মানুষ নিজেরাই পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। তারপর থেকেই গ্রামে যাতায়াত শুরু হয়েছে প্রশাসনের কর্তাদের। আসছেন রাজনৈতিক নেতারাও।
এ দিন নাসিরউদ্দিনকে দেখতে এসেছিলেন সাংসদ ইদ্রিস আলি-সহ অনেকে। শিশুটিকে কোলে নিয়ে আদর করেন। পরে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে বিবেকের টানে এখানে এসেছি। যত দ্রুত সম্ভব পাকা ঘর, পানীয় জলের কল এবং বাথরুম করে দেওয়া হবে।” খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, যত দিন না পরিবারটি বিপিএলের সুবিধা পাচ্ছেন, তত দিন চেষ্টা করা হবে বিশেষ নিয়মে পরিবারটিকে চাল-গম দেওয়ার। আরিফ যদি রিকশা কিনতে চান, সেই ব্যবস্থাও করা হবে বলে নেতারা আশ্বাস দিয়েছেন।