মেছোভেড়ির টাকা বিলি নিয়ে শনিবার তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিট বাধে দেগঙ্গা থানা চত্বরে। দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে সকলকে মানুষের সঙ্গে মিশে কাজ করতে হবে বলে রবিবার দেগঙ্গায় এক অনুষ্ঠানে এসে দলের উদ্দেশে বার্তা দিলেন তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কার্যকরী সভাপতি রথীন ঘোষ।
এ দিন দেগঙ্গার বেড়াচাঁপায় ওই অনুষ্ঠানে রথীনবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার ও দলের জেলা পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষ। দলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদ জেলা নেতৃত্ব ভাল চোখে দেখছেন না বলে এ দিন স্পষ্ট করে দেন তাঁরা। দলের জেলা সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “মেছোভেড়ি নিয়ে দলের মধ্যে কোনও রকম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মানা হবে না। দেগঙ্গার ঘটনায় তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দলের পক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শনিবার মেছোভেড়ির টাকা বিলি-বণ্টনকে কেন্দ্র করে থানা চত্ত্বরের মধ্যে পুলিশের সামনে দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারির ঘটনায় মাথা ফাটে দলের এক নেতার। তারই প্রতিবাদে বিকালে দেগঙ্গা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় দলের একাংশ। সন্ধ্যায় গোঁসাইপুর বাজারে দেগঙ্গা-হাড়োয়া রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সে সময়ে এক গোষ্ঠীর একটি দোকানে ভাঙচুর হয়। একটি দোকানের তালা মেরে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের তৃণমূলের বিরোধী দলনেতা হাবিব রেজা চৌধুরীকে গুরুতর আহত অবস্থায় বিশ্বনাথপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মারধরের ঘটনায় চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা তৃণমূল নেতা মহম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, মুজিবর রহমান এবং সুশান্ত মণ্ডলের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়। হাবিবের বিরুদ্ধেও পাল্টা অভিযোগ দায়ের হয় থানায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, দেগঙ্গার চাঁপাতলায় একটি খাস জমিতে মেছোভেড়ির দখলকে কেন্দ্র করে রাজ্জাক-গোষ্ঠীর সঙ্গে হাবিব-গোষ্ঠীর বিবাদ দীর্ঘ দিনের। বিষয়টি নিয়ে দলীয় নেতৃত্ব একাধিকবার আলোচনা করলেও সমস্যা মেটেনি। পুলিশ জানায়, শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ ওই ভেড়ির টাকা বিলি নিয়ে উভয় পক্ষের মারপিট বাধে। ৩টে নাগাদ হাবিব-গোষ্ঠীর লোকজন থানায় অভিযোগ জানাতে আসে। সে সময়ে রাজ্জাক-গোষ্ঠীর লোকজনও সেখানে পৌঁছয়। শুরু হয় মারপিট। পরিস্থিতি শান্ত করতে র্যাফ নামানো হয়।