ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে ২০ দিন।
কাকদ্বীপের যে ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ, তার পরিবারের কাছে সাহায্য নিয়ে ঘেঁষতে পারেনি প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে কথা বলতে চাইলেও রাজি হয়নি পরিবার। এ বার মুখ্যমন্ত্রীকেই পাল্টা খোলা চিঠি লিখে প্রশাসনের অস্বস্তি বাড়ালেন মৃতা ছাত্রীর মা। আর সেই চিঠির প্রতিলিপি নিয়েই শনিবার থেকে ১৬টি বামপন্থী সংগঠনের তরফে শুরু হল কাকদ্বীপ থেকে কামদুনি সাইকেল জাঠা। এত দিন সব দলের নেতারাই ওই ছাত্রীর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সমর্থন জানিয়েছেন। কিন্তু এ বার বাম গণ সংগঠনগুলি প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িয়ে গেল, নেপথ্যে রইল সিপিএম। এ দিন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির প্রতিবাদ সভায় এসে ওই ছাত্রীর বাবা-মা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কেন ফোনে কথা বলতে চাইছেন? মেয়েটা চলে গেল! এত বড় ক্ষতির সময়ে তিনি আসতে পারতেন। আমরা কোনও সাহায্য চাই না। আমরা দোষীদের শাস্তি চাই।’’ মঞ্চ থেকেই পতাকা দেখিয়ে ‘নিরাপদ পশ্চিমবঙ্গ চাই’ স্লোগান লেখা টি-শার্ট পরা ছাত্র-যুবদের সাইকেল মিছিলকে রওনা করান ছাত্রীর মা। শ’দুয়েক সাইকেলের ওই মিছিল তিন দিন চলে কামদুনিতে গিয়ে থামবে।
অপরাধের শাস্তি অবশ্য চাইলেই মেলে না। যেমন, কাটোয়া ধর্ষণ কাণ্ডে সরকার পক্ষ ‘যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ’ পেশ করতে না পারায় অভিযুক্তেরা বেকসুর খালাস হয়ে গিয়েছে। যদিও কিছুটা আলো দেখিয়েছে পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণে জড়িতদের সাজা। মেয়েটির বাবার আক্ষেপ, ‘‘পার্ক স্ট্রিটের অভিযুক্তেরা সাজা পেল, আর আমার ক্ষেত্রে তা হল না! পুলিশ তাড়াতাড়ি চার্জশিট না দিলে আমরা বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপালের কাছে পর্যন্ত যেতে পারি।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠিতে ছাত্রীর মা লিখেছেন, ‘‘পড়াশোনা বিশেষ জানি না, মেয়ের হাত ধরেই সই করতে শেখা। আমাদের মতো গরিব মানুষের কী সুস্থ ভাবে বাঁচার অধিকার নেই? মেয়ের ক্ষতবিক্ষত শরীর উদ্ধারের পরেও কেন ধর্ষণের মামলা রুজু করার জন্য আন্দোলন করতে হবে? কাদের আড়াল করতে এ সব করছে পুলিশ?’’
কাকদ্বীপ চৌরাস্তার মোড়ে প্রতিবাদ সভায় হাজির ছিলেন মহিলা সমিতির সর্বভারতীয় সভানেত্রী তথা সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য অঞ্জু কর, রাজ্য সম্পাদিকা মিনতি ঘোষ, সহ-সম্পাদিকা চন্দনা ভৌমিকেরা।