সুন্দরবনে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিকে সামনে রেখে শুরু হল ২০তম বর্ষ সুন্দরবন কৃষ্টি, মেলা ও লোকসংস্কৃতি উৎসব। ২০ ডিসেন্বর বাসন্তীর কুলতলিতে মিলনতীর্থ সোসাইটি আয়োজিত ওই মেলা শুরু হয়েছে। চলবে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কেন্দ্রীয় সরকারের ৩০টি, রাজ্য সরকারের ৮টি এবং বেসরকারি সংস্থার ২০০টি স্টল হয়েছে এই মেলায়। সেই সঙ্গে থাকছে ১০ দিনের যাত্রা প্রতিযোগিতা। রবিবার মেলার উদ্বোধন করেন বাসন্তীর বিধায়ক সুভাষ নস্কর। উপস্থিত ছিলেন অ্যাটমিক এনার্জির রিজিওনাল ডিরেক্টর প্রমোদ কুমার, ভারত সরকারের হস্তশিল্প বিভাগের রিজিওনাল ডিরেক্টর এস প্রভাকরণ, জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার অধিকর্তা জয়ন্ত বিশ্বাস প্রমুখ।
ইতিপূর্বে এই মেলার মঞ্চ থেকে সুন্দরবনবাসীর অনেক অপূর্ণ দাবি পূর্ণ হয়েছে। যেমন মাতলা সেতু, মডেল স্কুল, আইটিআই কলেজ, জুনিয়র হাইস্কুল, রেল লাইন সম্প্রসারণ-সহ বহুবিধ প্রকল্প। ২০১১ থেকে সুন্দরবনে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে মেলার মঞ্চ থেকে লক্ষাধিক গণ-স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদনপত্র তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে সাংসদ মনোহর তিরকির মাধ্যমে জমা দেন মেলা কমিটির চেয়ারম্যান লোকমান মোল্লা। যার প্রাপ্তি স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী চিঠির উত্তর দেন ২০১২ সালের ২৯ নভেম্বর।
এ বার মেলা শুরুর আগে সমস্ত ঘটনা উল্লেখ করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দেন লোকমান মোল্লা। লোকমান বলেন, ‘বিশ্বের বিস্ময় পৃথিবীর সেরা এই বাদাবন, যেখানে ৫০ লক্ষাধিক মানুষের বাস। স্বাধীনোত্তর যুগ থেকে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এখানকার মানুষ। সুন্দরবনের নামে ‘সুন্দরবন কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ অনুমোদনের দাবিতে কয়েক বছর ধরে আমরা আবেদন-নিবেদন করছি। এ বারের মেলা থেকে ফের লক্ষ লক্ষ সুন্দরবনবাসীর গণ-স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদনপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিতে চাই।’’ ক্যানিঙে মাতলা নদীর চরে কয়েক হাজার বিঘা পতিত জমি আছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠতে পারে বলে প্রস্তাব লোকমানের।
মেলার মঞ্চ থেকে আরও দু’টি দাবি উঠেছে, সুন্দরবনের ঝড়খালিতে কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাসন্তীর কুলতলিতে বিএড ও ডিএড কলেজ গড়ে তোলার। লোকমান জানান, সুন্দরবনের মানুষের জীবন-যন্ত্রণা তুলে ধরে সমস্যা সমাধানের প্রকৃত পথ বের করা-সহ সুন্দরবনের সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্নে এই মেলার মঞ্চকে দাবি আদায়ের ‘প্ল্যাটফর্ম’ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।