Gaighata

মারধর, ধৃত বিজেপি সাংসদ-ঘনিষ্ঠ

সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটার ঠাকুরনগর এলাকায়। ঘটনায় পাঁচজন জখম হয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা  

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২০ ০৫:১৫
Share:

ভাঙচুর: গাইঘাটায়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

মতুয়া মেলা বন্ধের দাবি নিয়ে ঠাকুরবাড়িতে স্মারকলিপি দিয়ে ফেরার সময় কয়েকজনকে মারধর করার অভিযোগ উঠল কিছু যুবকের বিরুদ্ধে। ভাঙচুর করা হয়েছে তাঁদের গাড়িও।

Advertisement

সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটার ঠাকুরনগর এলাকায়। ঘটনায় পাঁচজন জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মলয় মণ্ডলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রাতেই প্রহৃত ব্যক্তিরা গাইঘাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বনগাঁর এসডিপিও অশেষ বিক্রম দস্তিদার ও গাইঘাটা থানার ওসি লিটন রক্ষিত অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছেন। ভোর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতরা তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেছেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তবে তারা এই ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত নয় বলে শান্তনুর দাবি।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম উৎপল হালদার, নিলয় সাহা, নিধানেন্দু বিশ্বাস, রাহুল বিশ্বাস ও সুকদেব রায়। ধৃতদের মধ্যে নিলয় ও রাহুলের বাড়ি নিমতা এবং ঘোলা থানা এলাকায়। বাকিরা ঠাকুরনগরের বাসিন্দা। ধৃতদের কাছ থেকে পুলিশ তরোয়াল, রামদা, প্রচুর লাঠি ও বাঁশ উদ্ধার করেছে। নিলয় ও রাহুল ঠাকুরনগর এলাকায় কেন আশ্রয় নিয়েছিল পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে কথা ভেবেই এ দিন মলয়, লিটন মৈত্র, বাবলু দাসের মতো কয়েকজন মতুয়া ধর্ম মহামেলা বন্ধের দাবি তুলেছিলেন। তাঁরা ঠাকুরনগর রেলস্টেশনে বসে ওই বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের সই সংগ্রহ করেন। পরে তাঁরা গাইঘাটা থানায় ও প্রশাসনের কাছে মেলা বন্ধ করার দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতে তাঁরা মতুয়া ঠাকুরবাড়িও গিয়েছিলেন মমতা ঠাকুর ও শান্তনু ঠাকুরের কাছে স্মারকলিপি দিতে। প্রহৃতরা জানান, মমতা ঠাকুর স্মারকলিপি নিলেও শান্তনু ঠাকুরের তরফে কেউ স্মারকলিপি গ্রহণ করেননি। ঠাকুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে তাঁরা যখন বাড়ি ফিরছিলেন, তখনই কয়েকজন যুবক তাঁদের পথ আটকায়। গাড়ি থেকে তাঁদের ছ’জনকে নামতে বলা হয়। না নামায় তাঁদের গালিগালাজ করে ওই যুবকেরা। অভিযোগ, এরপরেই লাঠি, বাঁশ নিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে যুবকেরা। মারধর করা হয় তাঁদেরও। চিৎকার চেঁচামেচিতে আশপাশের লোকজন বেরিয়ে এলে ওই যুবকেরা চম্পট দেয়।

মলয়, লিটনরা বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে আমরা কয়েকদিন ধরে মানুষকে সচেতন করবার কাজ করছি। মতুয়া ধর্ম মহামেলায় লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। তাই এ বার আমরা মেলা বন্ধ রাখার দাবি তুলেছিলাম। মেলা থেকে প্রচুর টাকা উপার্জন হয়। তাই আমাদের উপর হামলা চালানো হল।’’ তাঁরা আরও বলেন, ‘‘যারা হামলা করেছে তাদের ঠাকুরবাড়িতে আনাগোনা রয়েছে। ওরা সবাই সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের অনুগামী।’’

প্রহৃতদের মধ্যেও অনেকেই বিজেপির নেতা-কর্মী। বাবলু সুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা। ফলে ঘটনার পিছনে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে কিনা সে প্রশ্নও উঠছে। শান্তনু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে আমার গাড়ির চালকও রয়েছেন। বাকিরা ঠাকুরবাড়িতে থাকেন। কাজকর্ম দেখাশোনা করেন। ওরা মারধরের ঘটনায় কোনও ভাবে যুক্ত নয়। আমিও চাই, যারা মারধর করেছে তারা গ্রেফতার হোক। পুলিশ কোনও তদন্ত না করেই এদের গ্রেফতার করেছে। ঘটনার পিছনে তৃণমূলের রাজনৈতিক চক্রান্ত আছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement