মধ্যপ্রদেশ থেকে ধৃত যুবক। নিজস্ব চিত্র।
সাইবার প্রতারণার শিকার হলেন সুন্দরবনের এক পুলিশ আধিকারিক। কাকদ্বীপের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (এসডিপিও) অনিল রায়ের নামে ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। অনিলের পরিবারের সদস্যদের ছবিও ব্যবহার করা হয়েছিল সেই ভুয়ো অ্যাকাউন্টে। ওই ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টাও করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানতে পেরেই অবাক হয়ে যান কাকদ্বীপের ওই পুলিশ আধিকারিক। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে সুন্দরবন পুলিশ জেলার সাইবার ক্রাইম বিভাগ তদন্তে নামে। তার পর মধ্যপ্রদেশ থেকে দীনেশ গুর্জর নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার আদালতে তোলা হলে অভিযুক্তকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১ জুন অনিল রায়ের নামে ফেসবুকে একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন অভিযুক্ত। সেই অ্যাকাউন্ট থেকে অনিলের পরিচিতদের ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’ পাঠাতে শুরু করেন। অনিলের অনেক পরিচিতই বন্ধুত্বের আবেদন গ্রহণও করেন। তার পর সেই অ্যাকাউন্ট থেকে পুলিশ আধিকারিকের পরিচিতদের কাছে চিকিৎসার নাম করে কখনও ২৫ হাজার, কখনও ৩০ হাজার টাকা চাওয়া হত বলে অভিযোগ। ‘গুগুল-পে’ এবং ‘ফোন-পে’-র মাধ্যমে সেই টাকা পাঠাতে বলতেন অভিযুক্ত প্রতারক। বার বার এ রকম আবেদন আসায়, সন্দেহ হয় অনিলের পরিচতদের। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ অনিলকে ফোন করে বিষয়টি জানান। এর পর এসডিপিও নিজের আসল ফেসবুক প্রোফাইল থেকে বন্ধুদের অনুরোধ জানান, তাঁর নামে খোলা ভুয়ো অ্যাকাউন্টের ফাঁদে না পড়তে। এর পর ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি নিষ্ক্রিয় করা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সুন্দরবন পুলিশ জেলার সাইবার ক্রাইম বিভাগ।
তদন্তে নেমে মধ্যপ্রদেশের রাইসেন জেলার বাসিন্দা এক যুবকের নাম জানতে পারেন তদন্তকারী অফিসাররা। মধ্যপ্রদেশ পুলিশের সহযোগিতায় রাইসেন জেলার পাপডা এলাকা থেকে দীনেশ গুর্জর নামে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে এ রাজ্যের পুলিশ। যে ফোন থেকে ওই ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছিল, সেই ফোন এবং সিমকার্ডটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার ধৃতকে কাকদ্বীপ আদালতে তোলা হয়েছিল। সেখানে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। ঘটনা নিয়ে এসডিপিও অনিল রায় বলেছেন, ‘‘সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) রাকেশ সিংহ অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানেই অপরাধের দ্রুত কিনারা হয়। জেলার সাইবার ক্রাইম বিভাগও দ্রুততার সাথে কাজ করেছে।’’