মৃত মালতি ঘোষ। প্রতীক ছবি।
দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে মঙ্গলবার সকালে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন বাগদার বগুলাপাড়ার মালতি সাঁতরা। বুধবার দুপুরে প্রায় ৩২ কিলোমিটার দূরে, বনগাঁ থানার ঘাটের কাছে ইছামতী থেকে শিশু দু’টির মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। কিন্তু তখন মহিলার খোঁজ মেলেনি। রাতে বনগাঁয় ট্রেনের ধাক্কায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বনগাঁ রেল পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাত পৌনে ১টা নাগাদ বনগাঁ রেল স্টেশন হয়ে একটি ট্রেন কারশেডের দিকে যাচ্ছিল। নিউ বাটারমোড় এলাকায় ট্রেনটির ধাক্কায় মহিলা গুরুতর জখম হন। তাঁকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও বাঁচানো যায়নি। রেল পুলিশের অনুমান, মহিলা ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন।
বৃহস্পতিবার সকালে মালতির স্বামী বলরাম ও তাঁদের পরিবারের লোকজন হাসপাতালে এসে মৃতদেহ শনাক্ত করেন। পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর তাঁরা মালতির খোঁজে পেট্রাপোল থানা এলাকার নানা জায়গায় ঘোরাঘুরি করেছেন।
তাঁরা খবর পেয়েছিলেন, মালতিকে পেট্রাপোল এলাকায় দেখা গিয়েছিল। বলরামের এক আত্মীয় বলেন, ‘‘হাসপাতালে এসেছিলাম শিশু দু’টির মৃতদেহ নিতে। তখনই জানতে পারি, মালতি ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। আমরা কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে দেখুক।’’ ভেঙে পড়েছেন বলরাম। তিনি বলেন, ‘‘সাজানো সংসার ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। কী ভাবে বাঁচব জানি না।’’
পুলিশের সন্দেহ, মালতি তাঁর দেড় বছরের মেয়ে সোনালি এবং চার বছরের ছেলে দেবব্রতকে ইছামতীর জলে ডুবিয়ে খুন করেছিলেন। তদন্তকারীরা জানান, ওই এলাকার সিসিক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে মেয়েকে কোলে নিয়ে এবং, ছেলের হাত ধরে মালতি ইছামতীর ঘাটে নামছেন। পরে দেখা যায়, মহিলা একা নদী থেকে উঠে আসছেন। তারপর থেকেই মালতি নিখোঁজ ছিলেন।