রাঙাবেলিয়ায় তাঁত বুনছেন গ্রামের মহিলা। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা।
হাতে তাঁত বুনে কাপড়, গামছা, চাদর, ব্যাগ-সহ নানা জিনিস তৈরি করছেন এলাকার মহিলারা। প্রায় চল্লিশ বছর ধরে গোসাবার রাঙাবেলিয়ায় মহিলাদের স্বনির্ভরতার দিশা দেখাচ্ছে তাঁত শিল্প।
সুন্দরবন বিশারদ হিসেবে পরিচিত, পদ্মশ্রী তুষার কাঞ্জিলালের স্ত্রী বীণার উদ্যোগে সুন্দরবনের এই প্রত্যন্ত এলাকার মহিলাদের হাতের কাজ শিখিয়ে স্বনির্ভর করে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল। তারই অঙ্গ হিসেবে ১৯৭৬ সাল নাগাদ শুরু হয়েছিল তাঁতের কাজ। এখনও জনা কুড়ি মহিলা নিয়মিত তৈরি করছেন তাঁতের জিনিসপত্র।
ইদানীং যন্ত্রচালিত তাঁত চলে আসায়, হাতে তাঁত বোনার চল নেই। তবে রাঙাবেলিয়ায় এখনও হস্তচালিত তাঁতেই কাজ হয়। উদ্যোক্তারা জানান, যন্ত্র এলে বহু মহিলা কাজ হারাবেন। সে কারণেই হাতেই তাঁত বোনা হয়। সংস্থার সম্পাদক পার্বতী শিট বলেন, “আমাদের এই সোসাইটির উদ্দেশ্য, মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলা। তাঁদের হাতের কাজ শিখিয়ে রোজগারের ব্যবস্থা করা।”
এখানে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের প্রায় সকলেই দুঃস্থ পরিবারের। বাঘে আক্রান্ত পরিবারের বেশ কিছু মহিলাও রয়েছেন। অনেকেই জানান, তাঁত বুনে যা রোজগার হয়, তাতেই সংসার চলে। তাঁতশিল্পী সুমনা মণ্ডল বলেন, “সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাঁতে কাপড় বুনি। বাড়তি রোজগারের জন্য বনবিবির পালাও গাইতে যাই। পরিবারের জন্য এটুকু তো করতে হবে।”
তাঁতের কাজে যুক্ত মহিলারা জানান, শুধুমাত্র সাদা সুতো কিনে আনা হয়। সেই সুতো রং করা থেকে শুরু করে কাপড় বোনা পর্যন্ত সবই করেন এখানকার শিল্পীরা।
সোসাইটির উপদেষ্টা লক্ষ্মী শাসমল বলেন, “হস্তচালিত তাঁত হওয়ায় আমাদের তৈরি সামগ্রীর দাম একটু বেশি। তাই চাহিদা কম। কিন্তু এলাকার মহিলাদের কর্ম সংস্থানের কথা ভেবেই আমরা শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”