রাহানা পরভীন
শ্বশুরবাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে সাত দিন হাসপাতালে লড়াই চালিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
শনিবার সকালে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হল রাহানা পরভিন (১৮) নামে ওই গৃহবধূর। পুলিশ জানিয়েছে, রাহানাকে বাঁচাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হন স্বামী জাকির হোসেনও। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনিও আর জি করে চিকিৎসাধীন।
দেগঙ্গা থানার হাদিপুর ঝিকরা-২ পঞ্চায়েতের জামালপুর হাটখোলার এই ঘটনায় শাশুড়ি আচিয়াবিবির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতার পরিবার। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মৃতদেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাড়োয়া থানার শ্যামলা গ্রামের নুরুজ্জামানের একমাত্র মেয়ে রাহানার সঙ্গে আড়াই বছর আগে বিয়ে হয় পেশায় দিনমজুর জাকিরের। ওই দম্পতির দেড় বছরের একটি ছেলে আছে।
পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে মৃতার পরিবার জানিয়েছে, গত রবিবার দুপুরে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি এলাকার এক বাসিন্দার কাছ থেকে তাঁরা খবর পান যে, রাহানা আগুনে পুড়ে গিয়েছে। তাঁকে প্রথমে একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হলেও সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোমবার আর জি করে স্থানান্তরিত করা হয়। শনিবার সকালে সেখানেই মৃত্যু হয় রাহানার।
নুরুজ্জামান বলেন, ‘‘দেখাশোনা করে বিয়ে দিয়েছিলাম মেয়ের। নগদ ৬০ হাজার টাকা, সোনার গয়না ও খাট-বিছানা, সবই দিয়েছি। তার পরেও আরও পণের দাবিতে শাশুড়ি মেয়ের উপরে অত্যাচার চালাতেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শাশুড়ির নানা রকম সমস্যার কথা মেয়ে জানিয়েছিল। আমরা জামাইকে বলতে বলি। শাশুড়ি জানতে পেরে মেয়ের উপরে অত্যাচার বাড়িয়ে দেয়।’’ শাশুড়িই রাহানার গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মেরে ফেলেছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন নুরুজ্জামান।
রাহানার জ্যাঠা শেখ রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘‘প্রতিবাদ করায় আমাদের মেয়েকে ওরা পুড়িয়ে মেরে ফেলেছে। দেড় বছরের শিশুটিকে অনাথ করে দিয়েছে। এমন শাশুড়ির কঠিন শাস্তির দাবি জানাই।’’
স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ জাকিরের চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাঁর শরীরের ৫০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। অবস্থা সঙ্কটজনক।