ছ’বছরের ছেলের সামনেই রাতভর চলেছিল মারধর। শেষে মুখে বিষ ঢেলে খুন করা হয় ছেলেটির মাকে। ছেলের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে যাবজ্জীবন সাজা হল বাবা, ঠাকুমা ও পিসির। শুক্রবার বারুইপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়েরা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক রমেন্দ্রনাথ মাখাল ওই সাজা শোনান।
খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১০ সালে ১১ ডিসেম্বর। সোমা মৃর্ধা নামে ওই তরুণীর মৃত্যুতে পর দিন তাঁর বাবা ঝোড়ো মণ্ডল জয়নগর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। সোমার স্বামী জগদীশ মৃর্ধা, শ্বাশুড়ি গীতা মৃর্ধা, ননদ রূপা মৃর্ধা, শ্বশুর চিত্তরঞ্জন ও খুড়শ্বশুর জগদীশের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ পাঁচজনকেই ধরে। পরে সকলে জামিন পায়। পুলিশ জানায়, মামলায় ১১ জন সাক্ষী ছিলেন। অন্যতম সাক্ষী ছিল সোমার ছেলে রাজেশ। মাকে কী ভাবে খুন করা হয়েছিল, তা এজলাসে দাঁড়িয়ে জানায় সে। সরকারি আইনজীবী তপন মণ্ডল বলেন, ‘‘রাজেশের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছিল।
ওই সাক্ষ্যর ভিত্তিতেই রাজেশের বাবা, ঠাকুমা ও পিসিকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক।’’ এ দিন আদালতে আসেনি রাজেশ। তার দাদু ঝোড়ো বলেন, ‘‘নাতি আমার কাছেই থাকে। এখন একাদশ শ্রেণিতে পড়ছে।’’ ঝোড়ো বলেন, ‘‘বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে মেয়ের উপরে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চলত। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মেয়ে নানা সময়ে আমার কাছে চলে আসত। কিন্তু ওরা মেয়েটাকে মেরে ফেলবে, ভাবতে পারিনি। আমার নাতিই তাঁর মায়ের খুনিদের শাস্তির ব্যবস্থা করেছে।’’ সরকারি আইনজীবী তপন মণ্ডল বলেন, ‘‘সোমার শ্বশুর চিত্তরঞ্জন ও খুড়শ্বশুর জগদীশের বিরুদ্ধে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কোনও তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাঁদের বেকসুর খালাস করা হয়েছে।’’