নার্সরা ত্রাণ দিচ্ছেন মৌসুনি দ্বীপের দুঃস্থ মানুষদের।
নদী-সমুদ্রে ঘেরা নামখানার প্রত্যন্ত মৌসুনি দ্বীপের দুঃস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়ালেন এসএসকেএম হাসপাতালের কয়েকজন নার্স। বুধবার ওই দ্বীপের প্রায় ৪০০ পরিবারের হাতে তাঁরা তুলে দিলেন প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ও অন্য সরঞ্জাম।
বটতলা-চিনাই নদী ও বঙ্গোপসাগরে ঘেরা মৌসুনি পঞ্চায়েতের জনসংখ্যা প্রায় তিরিশ হাজার। দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষের সংখ্যাই বেশি। লকডাউনের জেরে কাজ হারিয়ে বিপদে পড়েছেন অনেকেই। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অভাব এই এলাকার মানুষের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু লকডাউনের জেরে নদী ও সড়কপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাজ হারিয়ে পরিবারগুলির একেবারে নাস্তানাবুদ অবস্থা।
এই দুর্দিনে তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন এসএসকেএমের ১১ জন নার্স। নিজেরা ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা তুলে সেই টাকায় চাল, ডাল, তেল, সয়াবিন, ডিম, আটা, নুন কিনে ৪০০ পরিবারের হাতে তুলে দিলেন শিউলি পাল, স্নেহলতা মুখোপাধ্যায়, সুজাতা কামিল্লা, আলপনা ঘোড়ুই, নিবেদিতা সাউরা। দেওয়া হল সাবান, মাস্কও।
মৌসুনির বাসিন্দা সুচিত্রা বারিক, কমলা জানারা বলেন, "আমরা কী কষ্টে রয়েছি, বলে বোঝাতে পারব না। সেই কবে রেশনের চাল-গম পেয়েছিলাম। তা শেষ হয়ে গিয়েছে। ক’দিন ধরে শাক সেদ্ধ খেয়ে রয়েছি। ওঁরা এই বিপদের সময়ে ভগবানের মতো আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।"
শিউলি পাল বলেন, "আমাদের হাসপাতালের ডেপুটি নার্সিং সুপার মিঠু সেনের সহযোগিতায় এবং আমার এক পরিচিতের মাধ্যমে ওই দ্বীপের অসহায় মানুষদের কথা জানতে পারি। লকডাউনের জেরে খুবই সমস্যার মধ্যে রয়েছেন এঁরা। চাষি, মৎস্যজীবীদের রোজগার পুরোপুরি বন্ধ। ঠিক করি, এঁদের সাহায্য করা দরকার। ভবিষ্যতেও আমরা এই রকম আরও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।"
তাঁদের পাশে থেকে সহযোগিতা করার জন্য স্থানীয় একটি ক্লাব ও পুলিশ-প্রশাসনকে ধন্যবাদ
দেন নার্সরা।