মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেও হাবড়া বাজারে ভিড়। ছবি: সুজিত দুয়ারি
হাবড়ায় আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে ৮ দিনের পূর্ণ লকডাউন। লকডাউনের দিনগুলিতে ওষুধ এবং দুধের দোকান খোলা থাকছে।
হাবড়া পুরসভার পুরপ্রশাসক নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘লকডাউনে দুধ এবং ওষুধের দোকান খোলা থাকছে। ব্যাঙ্ক, ডাকঘর, নার্সিংহোমের মতো জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে। তবে জরুরি এবং আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বাড়ির বাইরে বেরোতে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরে বের হতে হবে। যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।’’ এদিকে শহরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত শহরে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০৯ বলে জানিয়েছেন পুরপ্রশাসক। লকডাউনের আগে মঙ্গলবার শহরের বাজার, দোকানগুলিতে ভিড় জমেছিল সকাল থেকে। অনেকেই মাস্ক না পরে বেরিয়েছিলেন। অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভা এলাকায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। নিয়মিত মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ইতিমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা একশো পেরিয়ে গিয়েছে। সোমবারই নতুন করে ৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘সোমবার পর্যন্ত পুরসভা এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১২০ জন। ইতিমধ্যেই ৫২ জন সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। ২ জন মারা গিয়েছেন। বাকিরা চিকিৎসাধীন।’’
করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমাতে এ বার কড়া পদক্ষেপ করল পুরসভা। সোমবার এলাকার ২১টি ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন পুর কর্তৃপক্ষ। সেখানে পূর্ণ এবং আংশিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, সপ্তাহে মোট ৩ দিন পূর্ণ লকডাউন করা হবে।
রাজ্য সরকারের নির্দেশে সপ্তাহে ২ দিন এবং পুরসভা ১ দিন লকডাউন করবে। এ ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৪ দিন সকাল ৬ থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বাজার, দোকান খোলা থাকবে। দুপুর ২ টোর পর থেকে সম্পূর্ণ লকডাউন চলবে পরদিন সকাল পর্যন্ত। ওই সময়ে ওষুধের দোকান ছাড়া অন্য সব দোকান বন্ধ থাকবে। যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। প্রবোধ বলেন, ‘‘দুপুর ২ টোর পর লকডাউন শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার থেকে। গোটা অগস্ট মাস জুড়ে সপ্তাহে ৩ দিন পূর্ণ লকডাউন এবং সপ্তাহের বাকি ৪ দিন আংশিক লকডাউন চলবে। এই সময়ে মাস্ক পরা এবং শারীরিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখার উপর কড়া নজর রাখা হবে। পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি পুরসভার কর্মীরাও প্রয়োজনে পথে নামবেন।’’ ব্যবসায়ীরা এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। গোলবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক গুপি মজুমদার বলেন, ‘‘করোনা মোকাবিলায় পুরসভার সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিয়েছি এলাকার মানুষের স্বার্থে।’’
করোনা কমাতে সম্প্রতি লকডাউন করা হয়েছিল। কিন্তু লকডাউন উঠতেই বাজারে সড়কে ভিড় উপচে পড়ে। অভিযোগ মাস্ক না পরেই ঘোরাঘুরি বেচাকেনা চলে। শারীরিক দূরত্ব বিধি অনেকাংশেই মানা হচ্ছিল না। সে জন্যই ফের লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, স্থানীয় ভাবেও এখন করোনা সংক্রমণ হতে শুরু করেছে। লকডাউনের সুফল মেলার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন শহরবাসী।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)