ছবি: পিটিআই।
ভিন রাজ্যে চিকিৎসা করাতে গিয়ে লকডাউনের জেরে আটকে পড়েছেন হাবড়ার এক দম্পতি। খাবারও পাচ্ছিলেন না তাঁরা। সেই খবর জানতে পেরে তাঁদের খাবার পৌঁছে দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবড়ার ওয়েষ্ট কামারথুবা রোড এলাকার বাসিন্দা বিশ্বনাথ দে-র হার্টের অসুখ রয়েছে। তিনি গৃহ শিক্ষকতা করেন। ১৮ মার্চ হার্টের চিকিৎসা করাবেন বলে স্ত্রী শিপ্রাকে নিয়ে বেঙ্গালুরুতে যান। শিপ্রার গলব্লাডারের সমস্যা ছিল। বেঙ্গালুরুতে পৌঁছে শিপ্রার হঠাৎ গলব্লাডারের সমস্যা বেড়ে যায়। তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। সব মিলিয়ে দু’জনের চিকিৎসায় লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়ে যায়। ২০ মার্চ থেকে দম্পতি মাসে তিনশো টাকা দিয়ে বাড়ি ভাড়া করে রয়েছেন। লকডাউনের ফলে যানবাহন বন্ধ। ফলে তাঁরা বাড়িতেও ফিরতে পারছেন না। হাতের টাকাও প্রায় শেষ। ওষুধ কেনারও টাকা নেই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেখে হাবড়ার টুনিঘাটা এলাকার একটি মানবাধিকার সংগঠনের সম্পাদক সঞ্জীব কাঞ্জিলাল বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি বিশ্বনাথের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। তাঁদের সমস্যার কথা শুনে সঞ্জীব বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ হাবড়া ১ বিডিও শুভ্র নন্দীকে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানান।
বিডিওর কাছে ওই আবেদন করার এক ঘণ্টার মধ্যে রাজ্য প্রশাসন থেকে বিশ্বনাথের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁদের সমস্যার কথা জানেন প্রশাসনের কর্তারা। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বেঙ্গালুরুতে স্থানীয় থানার তরফে বিশ্বনাথের কাছে ৭ কেজি চাল, ১ কেজি আঁটা, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি আলু, ৫০০ গ্রাম পেঁয়াজ ও ১ প্যাকেট মশলা পৌঁছে দেওয়া হয়। বিশ্বনাথ বলেন, ‘‘এখানের থানা থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, খাদ্য সামগ্রী ফুরিয়ে গেলে আবার দেওয়া হবে। বাড়ি ভাড়ার বিষয়টি নিয়েও এখন চিন্তিত না হওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।’’ বিডিও বলেন, ‘‘সমস্যার কথা জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে রাজ্য প্রশাসন ঘটনার কথা জেনে ওই দম্পতির সঙ্গে কথা বলে ওখানের পুলিশ প্রশাসনের সাহায্যে তাঁদের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।’’ প্রশাসনের পদক্ষেপে খুশি সঞ্জীব। তাঁর কথায়, ‘‘প্রশাসন যে ভাবে দম্পতির পাশে দাঁড়াল, আমরা কর্তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’ বিডিও জানান, বাইরে থাকা মানুষ যাতে নিয়মিত খাবার পান তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাঁদের থাকার বিষয়টিও দেখা হবে।