Ganga Sagar Mela 2025

প্লাস্টিক-মুক্ত রাখার চেষ্টা গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণ

প্রশাসন সূত্রের খবর, মেলা চত্বর প্লাস্টিক-মুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। যৌথ ভাবে এই কাজ করছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর, জেলা প্রশাসন ও গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ।

Advertisement

সমরেশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ০৬:৩৬
Share:

প্লাস্টিক মুক্ত করার প্রয়াস গঙ্গাসাগর মেলাকে। - নিজস্ব চিত্র।

পরিবেশ-বান্ধব গঙ্গাসাগর মেলা করতে তৎপর জেলা প্রশাসন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ২ নম্বর রাস্তায় স্নানঘাটের কাছে ‘গ্রিন ক্লিন গঙ্গাসাগর মেলা’র উদ্বোধন করেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত। উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা। জেলাশাসক বলেন, ‘‘পরিবেশবান্ধব মেলা করার জন্য একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। সমুদ্রতট-সহ মেলা প্রাঙ্গণ সাফসুতরো রাখতে পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য প্লাস্টিক-মুক্ত গঙ্গাসাগর মেলা করার।’’ মেলা যাতে নির্বিঘ্নে শেষ করা যায়, তা নিশ্চিত করতে নবান্ন থেকে সরাসরি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কয়েক জন মন্ত্রীকেও পৃথক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন তিনি।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রের খবর, মেলা চত্বর প্লাস্টিক-মুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। যৌথ ভাবে এই কাজ করছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর, জেলা প্রশাসন ও গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ। এ বছর মেলায় পরিবেশ-বান্ধব ১৬ লক্ষ ব্যাগ বিলি করা হবে। বসানো হয়েছে বর্জ্য নিষ্কাশনের যন্ত্র। রাখা হয়েছে চার হাজার ডাস্টবিন। মেলা চত্বরের দোকানগুলি থেকেও পরিবেশবান্ধব ব্যাগ বিলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে ঘোষণা চলছে প্রশাসনের তরফে। মেলা প্রাঙ্গণ ও সমুদ্রতট নোংরা না করার আবেদন করা হচ্ছে।

পাটের ব্যাগে প্রসাদ বিতরণের জন্য মন্দির কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে প্রশাসন। পর্যটকেরা যাতে প্লাস্টিকের জলের বোতল যেখানে সেখানে না ফেলেন, তা-ও দেখা হচ্ছে। সমুদ্র-দূষণ রুখতে কপিলমুনি মন্দিরের সামনে সৈকতের এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ‘ফ্লোটিং বুম’ রাখা হয়েছে। সঙ্গে থাকছে জাল। এই ভাসমান বুম জলের উপরিভাগ থেকে জালকে ভাসিয়ে রেখে জলের আবর্জনা আটকাবে। এ বছর মেলা চত্বরে স্থায়ী শৌচালয় থাকছে প্রায় আড়াই হাজার। অস্থায়ী শৌচালয় থাকছে ৩৫০০টি। যদিও লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য তা পর্যাপ্ত কিনা, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Advertisement

গঙ্গাসাগর মেলায় কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। এই ধরনের মেলাকে প্লাস্টিক মুক্ত করা কি আদৌ সম্ভব?

প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা সকলে মিলে চেষ্টা করছি। সাফল্য নিয়ে আশাবাদী। সাগরদ্বীপ, লট-৮ এবং নামখানা পয়েন্টের স্থানীয় দোকান, ডালা, রেস্তরাঁয় প্লাস্টিক বদল এবং বিতরণ কর্মসূচি নিয়েছে প্রশাসন।’’ প্লাস্টিকের পরিবর্তে ওই সব দোকান, রেস্তরাঁয় দেওয়া হবে পাট বা বাঁশপাতার ব্যাগ বা ঠোঙা। তার সঙ্গে থাকবে মাটিতে দিলে দ্রুত মিশে যায়, এমন পচনশীল জিনিস দিয়ে তৈরি চায়ের কাপ, গ্লাস, চামচ, স্ট্র-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের কাজে লাগাচ্ছে তারা। মেলা চত্বরে তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের পথে ১০টি কিয়স্কের ব্যবস্থাও থাকছে। এই পরিষেবা মিলবে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।

গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিক নীলাঞ্জন তরফদার বলেন, ‘‘প্লাস্টিকের জিনিসপত্র ঠেকাতে ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবী থাকবে সাগরদ্বীপ, কাকদ্বীপের জেটিঘাটে ঢোকার রাস্তায় এবং নামখানায়। কারও হাতে প্লাস্টিক দেখলে স্বেচ্ছাসেবীরা তা নিয়ে নেবেন। পরিবর্তে প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেবেন সংশ্লিষ্ট তীর্থযাত্রীর হাতে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement