ফেরা: ওড়িশায় দুর্ঘটনায় মৃতদের দেহ ফিরল মাটিয়ার গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।
ওড়িশায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত সাত শ্রমিকের পরিবারের হাতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া হল।
শুক্রবার রাতে বসিরহাটের মাটিয়ার নেহালপুর থেকে সাত জন গাড়িতে করে মুরগি আনতে গিয়েছিলেন ওড়িশায়। কটকের কাছে একটি গাড়ির পিছনে ধাক্কা দেয় মুরগির গাড়িটি। সে সময়ে পিছন থেকে একটি ট্রাক এসে মুরগির গাড়িতে ধাক্কা মারে। মারা যান ৭ জন।
ওড়িশা প্রশাসন দেহগুলি ময়না তদন্তের পরে তুলে দিয়েছে রাজ্য সরকারের হাতে। সরকারি তৎপরতায় রবিবার দুপুরে দেহ ফেরে গ্রামে। কান্নার রোল ওঠে। কয়েকশো মানুষের চোখের জলে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশে এ দিন দুপুরে নেহালপুরে দেহ নিয়ে আসেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রীতি গোয়েল, মহকুমাশাসক মৌসম মুখোপাধ্যায়, পুলিশ সুপার জবি থমাস কে, বসিরহাট তৃণমূল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দক্ষিণ বঙ্গীয় রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার চেয়ারম্যান এটিএম আবদুল্লাহ রনি, বিধায়ক নুরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। রাজ্য সরকারের তরফে চেক তুলে দেওয়া হয় পরিবারগুলির হাতে। দলীয় ভাবে ১০ হাজার টাকা, চাল, ডাল, আলু সহ খাদ্যসামগ্রীও দেওয়া হয়েছে পরিবারগুলিকে।
জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘যে সংস্থার হয়ে কাজ করতে শ্রমিকেরা, তাঁরা যাতে আর্থিক সাহায্য করেন, তা দেখা হবে। পাশাপাশি, কেন সংস্থার তরফে এই শ্রমিকদের জন্য বিমা করা হয়নি, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে।’’ শ্রমিকদের জন্য মাথা পিছু ২০ লক্ষ টাকার বিমা করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। মৃত্যুদের পরিবারের এক জনকে যেন ওই সংস্থা চাকরি দেয়, তা দেখার জন্য এডিএম, মহকুমাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে বলেন বনমন্ত্রী।
জ্যোতিপ্রিয়ের কথায়, ‘‘এখানে এসে শুনছি বাঁকুড়া, আরামবাগ, ওড়িশা, পুরুলিয়া থেকে কে আগে মুরগি আনতে পারবে, তা নিয়ে সংস্থাগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে। তাতেই দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রাণ যাচ্ছে গরিব শ্রমিকদের।’’
গত ৫-৬ বছরে দুর্ঘটনায় এখানকার বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘এমনটা চলতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে সংস্থার মালিকদের সঙ্গে কথা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকেও বিষয়টি জানাব।’’