প্রতীকী ছবি।
ভিন্রাজ্য থেকে লক্ষাধিক পুণ্যার্থী গঙ্গাসাগরে পুণ্য-স্নানে আসেন। তাঁদের সংস্পর্শে এসে সাগর দ্বীপের বাসিন্দারা করোনা আক্রান্ত হতে পারেন। সেই আশঙ্কা থেকেই ২০২২ সালের গঙ্গাসাগর মেলার আগে সাগর দ্বীপের বাসিন্দাদের ১০০ শতাংশ টিকাকরণের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাগর ব্লকের ৮টি পঞ্চায়েতে জনসংখ্যা ৩ লক্ষের বেশি। এঁদের মধ্যে ভোটারের সংখ্যা ১ লক্ষ ৮৩ হাজার। গঙ্গাসাগর মেলা লাগোয়া গঙ্গাসাগর, মুড়িগঙ্গা ১, ধবলহাট, রুদ্রনগর পঞ্চায়েত ও কাকদ্বীপের লট ৮ ঘাট দিয়ে মুড়িগঙ্গা নদী পারাপার করেন পুণ্যার্থীরা। শুরুর দিকে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, ওই ঘাট-লাগোয়া রামকৃষ্ণ পঞ্চায়েত এলাকার ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সমস্ত বাসিন্দার টিকাকরণ হবে। পরে সিদ্ধান্ত হয়, সাগর ব্লকের সমস্ত প্রাপ্তবয়স্ক বাসিন্দার টিকাকরণ করা হবে। সেই মতো স্থানীয় বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা স্বাস্থ্য দফতরকে জানান। সেখান থেকেই জেলাশাসককে জানানো হয়েছে। এরপরে জোর দেওয়া হয়েছে টিকাকরণে।
প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের ১০-১৫ তারিখে সাগর মেলায় ৫-১০ লক্ষ মানুষ আসেন। সেই ভিড় থেকে যাতে সংক্রমণ রোধ করা যায়, সে জন্য চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। প্রথম দিকে সাগর ব্লকের গ্রামীণ হাসপাতাল ও ব্লক থেকে টিকা দেওয়া হলেও টিকার জোগান অনুযায়ী তা বাড়ানো হয়েছে। এখন ৮টি পঞ্চায়েত ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি থেকেও টিকা দেওয়া হচ্ছে। টিকাকরণের ক্ষেত্রে ওই এলাকায় সাগর মেলার সঙ্গে যুক্ত গাড়ির চালক, আশাকর্মী, দোকানদার, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আগে ১২ বছরের কম বয়সি শিশুর মায়েদেরও টিকাকরণ চলছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭৫ হাজারজন টিকা পেয়েছেন। তার মধ্যে টিকার দু’টি ডোজ় পেয়েছেন প্রায় ২৮ হাজারজন।
আদালতের নির্দেশে কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২০২১ সালে গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। আগামী বছরের জন্য অনেক আগে থেকেই সাগর মেলার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে প্রশাসন। মেলা নিয়ে কয়েক দফা জেলা প্রশাসন বৈঠকও করেছে।
সাগরের বিডিও সুদীপ মণ্ডল বলেন, “সাগরের ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সমস্ত বাসিন্দাকেই টিকা দেওয়া হবে। তবে মেলার সঙ্গে যুক্ত ১৮-৪৫ বছর বয়সি সকলকে টিকার দু’টি ডোজ়ের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে টিকাকরণের পাশাপাশি ক’দিন আগে কপিলমুনি মন্দির চত্বরে সাধু, পুরোহিত-সহ প্রায় সাড়ে ৩০০ জনের জন্য বিশেষ টিকাকরণের শিবির করা হয়েছে।”
মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, “গঙ্গাসাগরে ভিন্রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। তাঁদের সংস্পর্শে এসে করোনা আক্রান্ত যাতে কেউ না হন, তাই মেলার আগে সকল বাসিন্দাকে টিকা দেওয়ার বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। সেই মতো সকলকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। মেলার বিভিন্ন কাজকর্মের সঙ্গে যাঁরা সরাসরি যুক্ত থাকেন, তাঁদের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।”