—ফাইল চিত্র।
সোনারপুরের লাঙলবেড়িয়া সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পদক্ষেপ করল রাজ্য সমবায় দফতর। সমবায় সূত্রে খবর, গ্রাহকেরা প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে যাতে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতে তিন অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। গত ২৮ অগস্ট নিয়োগ করা হলেও, সোমবার সমবায় সমিতির অফিসে আসেন ওই তিন অফিসার।
কয়েক দিন আগে লাঙলবেড়িয়া অঞ্চল সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেডে অন্তত ১০ কোটি টাকা আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। অবরোধ করা হয় কামালগাজি-বারুইপুর বাইপাস। গ্রাহকদের অভিযোগ ছিল, গত ছ’মাস ধরে ব্যাঙ্কের মোট ৬,৩১৯ জন গ্রাহক তাঁদের জমানো টাকা পাচ্ছেন না। ঋণ দেওয়ার নামে গ্রাহকদের অর্থ নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিক্ষোভকারীরা জানান, তাঁরা লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকাও পাচ্ছেন না। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিষয়টি প্রথম তাঁদের নজরে আসে। এ নিয়ে বিডিও অফিস থেকে শুরু করে মহকুমাশাসকের কাছে দরবার করেও কোনও সুরাহা হয়নি। তাঁদের আরও অভিযোগ, ‘অডিট’ করার নামে প্রহসন চলছে সমবায়ে। সমবায়ের যিনি স্পেশাল অফিসার ছিলেন, সেই সৌগত চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ তুলেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। সৌগতকে অবশ্য বদলি করা হয়েছে। অর্থ তছরুপের অভিযোগ খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিন জনকে। তাঁরা হলেন— কোঅপারেটিভ ডেভেলপমেন্ট অফিসার মহেশ বসু এবং শেখর দাস এবং কোঅপারেটিভ ইন্সপেক্টর সুদীপ্ত চক্রবর্তী। সমবায় সূত্রে খবর, এই তিন অফিসার গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই সমবায় সমিতির গ্রাহক সংখ্যা কয়েক হাজার। তাঁদের বেশির ভাগই দরিদ্র। একটু একটু করে এখানেই সঞ্চয় করেছিলেন তাঁরা। অনেকের লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকাও আসে এই সমবায় সমিতির অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। স্থানীয় কয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর টাকাও এই সমিতির মাধ্যমে আসত। অভিযোগ, মাস ছয়েক ধরে সমবায় থেকে কোনও টাকা মিলছে না। সর্বাণী প্রামাণিক নামে এক বৃদ্ধা বলেন, ‘‘দিনমজুরির টাকা থেকে কষ্ট করে জমিয়েছিলাম। নিজের চিকিৎসার প্রয়োজনে টাকা তুলতে গিয়ে পাইনি। শেষে ভিক্ষা করে চিকিৎসা করেছি।’’ আর এক আন্দোলনকারী সালাম মল্লিক বলেন, ‘‘ছ’হাজারের মতো গ্রাহকের কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি হয়েছে। প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে জানানো হয়েছে। সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে চেয়ে অবরোধ করেছিলাম। পুলিশ জোর করে তুলে দিয়েছে।’’