কচুরিপানা সরছে বনগাঁর ইছামতী থেকে

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাতভাই কালীতলা এলাকায় ইছামতীর পাড়ে গোটা পৌষ মাস জুড়ে মেলা চলে। প্রাচীন কালীমন্দিরকে কেন্দ্র করে হওয়া ওই মেলায় শনি-মঙ্গলবার অসংখ্য মানুষ আসেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩১
Share:

শহর এলাকায় সরানো হচ্ছে কচুরিপানা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

বনগাঁ শহর ও সংলগ্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ইছামতী নদী থেকে কচুরিপানা সরানোর কাজ সম্প্রতি শুরু করেছে বনগাঁ পুরসভা। এর ফলে বহু দিন পরে নদীর জল দেখতে পাচ্ছেন এলাকাবাসী। মশামাছি, সাপখোপের হাত থেকে নিস্তার পাবেন জেনে খুশি নদীপাড়ের বাসিন্দারাও।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাতভাই কালীতলা এলাকায় ইছামতীর পাড়ে গোটা পৌষ মাস জুড়ে মেলা চলে। প্রাচীন কালীমন্দিরকে কেন্দ্র করে হওয়া ওই মেলায় শনি-মঙ্গলবার অসংখ্য মানুষ আসেন। মন্দিরে পুজো দিয়ে তাঁদের মধ্যে কোনও কোনও দল নদীপাড়ে বনভোজনে যান। সড়কপথ ছাড়া জলপথেও লোকজন মেলায় যান। বনগাঁ শহর থেকে নৌকো করে মেলায় যাওয়ার রেওয়াজ অনেক দিনের। যা নিয়ে প্রবীণ মানুষের বহু সুখস্মৃতিও রয়েছে।

পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, হালফিলের এই নদী সংস্কারের প্রাথমিক কারণ দু’টি। প্রথমত, নদী যাতে দূষণমুক্ত থাকে। দ্বিতীয়ত, সাধারণ মানুষ যাতে আগের মতো নৌকো চেপে মেলায় যেতে পারেন, পিকনিকের আকর্ষণ যাতে বা়ড়ে। অথচ নদীপথ কচুরিপানায় বদ্ধ হয়ে পড়ায় তা সম্ভব হচ্ছিল না। নদীসংস্কার হলে চলতি মরসুম থেকেই ভ্রমণার্থীরা নৌকোয় চাপতে পারবেন বলে আশা পুর কর্তৃপক্ষের। নদীপথ অগম্য হওয়ায় বহু মৎস্যজীবী জীবিকা হারিয়ে অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন। পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘দীনবন্ধু নগর থেকে সাতভাই কালীতলা পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার নদীপথ থেকে কচুরিপানা তোলা হচ্ছে। এ জন্য পুরসভার খরচ হচ্ছে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা।’’ পুরসভার তরফে অবশ্য শহর এলাকার নদী আগেও কচুরিপানামুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু বনগাঁ মহকুমার গ্রামীণ এলাকার নদী-পরিস্থিতি খুবই হতাশাজনক। আগে গ্রামীণ এলাকায় একশো দিনের কাজের প্রকল্পে নদী থেকে কচুরিপানা তোলা হত। কয়েক বছর হল এই কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে, নাব্যতা হারিয়ে বাগদার দত্তফুলিয়া থেকে গাইঘাটার কালাঞ্চি পর্যন্ত প্রায় ৫৭ কিলোমিটার ইছামতী বহু দিন ধরেই মৃতপ্রায়।

Advertisement

সাধারণ মানুষ মনে করেন, পুরসভার মতো পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি এলাকাতেও যদি নদী থেকে কচুরিপানা তোলার পদক্ষেপ করা হয়, তা হলে নদী সংস্কার সম্পূর্ণ হয়। এ ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতগুলি অবশ্য জানিয়েছে, ইচ্ছে থাকলেও তাদের আর্থিক সংগতি নেই বলে সম্পূর্ণ নদী সংস্কারে হাত দিতে পারে না তারা।

বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বনগাঁ মহকুমার গ্রামীণ এলাকার নদী থেকেও কচুরিপানা তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কচুরিপানা দিয়ে জৈব সার তৈরির সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement