গরম পড়তেই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বাড়ছে সমস্যা
Water crisis

মগরাহাটে জলের আকাল, ভোগান্তি

৭০টি পরিবারের বাস। পাড়ায় একটি মাত্র নলকূপ। তা-ও মাঝে মধ্যেই অকেজো হয়ে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৫৪
Share:

অপেক্ষা: টাইমকলের সামনে জলের লম্বা লাইন। ছবি: দিলীপ নস্কর।

এলাকা জুড়ে পানীয় জলের সঙ্কট চলছে, মূখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠকে সে কথা তুলেছিলেন মগরাহাট পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক নমিতা সাহা। ২০২০ সালের ২৬ মার্চ বিষ্ণুপুরের পৈলানে ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, জলের অপচয় বন্ধ করে খালের জল চাষের কাজে ব্যবহার হবে। পাইপের জল ব্যবহার হবে পানীয় হিসেবে। ওই সভায় উপস্থিত জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিককেও বিষয়টি দেখার জন্য বলা হয়েছিল। তার এক বছর পরেও মানুষের পানীয় জলের সমস্যার সমাধান হল না এলাকায়।

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মগরহাট ২ ব্লকটি মগরাহাট পূর্ব কেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে। ওই ব্লকে রয়েছে ১৪টি পঞ্চায়েত। বছর ষোলো আগে নোদাখালির ডোঙাড়িয়া থেকে পাইপ লাইনের সাহায্যে মগরাহাটের এলাকায় ৮টি ট্যাঙ্কে জল সরবরাহ শুরু হয়। ওই ট্যাঙ্কের জল পাইপ লাইনের সাহায্যে গ্রামীণ এলাকায় পৌঁছয়। কিন্ত দীর্ঘ দিন দিন ধরে মাটির নীচের পাইপ লাইনের সংস্কারের কাজ না হওয়ায় কোথাও পাইপ ফেটে জল বেরিয়ে যাচ্ছে, কোথাও পাইপ লাইনের সংযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় জল সরবরাহ প্রায় বন্ধ। ট্যাঙ্কে জল না ওঠায় গ্রামীণ এলাকায় পাইপ লাইনে জল পৌঁছচ্ছে না। এ দিকে, আবার গরমের শুরুতেই জলস্তর নেমে যাওয়ায় গ্রামের পর গ্রাম নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। পুকুর, খাল, বিলেও জল তলানিতে ঠেকে যাওয়ায় তা ব্যবহার করার মতো অবস্থায় নেই। এর জেরে পানীয় জলের হাহাকার দেখা দিয়েছে মুলটি, হোটর মর্যাদা, ধামুয়া দক্ষিণ, ধনপোতা, উড়েলচাঁদপুর এবং গোকর্ণী-সহ অন্যান্য পঞ্চায়েতে এলাকায়। ২-৩ কিলোমিটার দূর থেকে জল বয়ে আনতে হচ্ছে। পাশের গ্রামে জল আনতে গেলে আবার প্রায়ই ঝগড়াঝাটি বাধছে।

মুলটি পঞ্চায়েতে বনসুন্দরিয়া গ্রামে সারা এলাকায় জুড়ে মাটির নীচে পাইপ লাইন রয়েছে। কিন্ত ট্যাপ কলে জল আসা প্রায় ৫ বছর ধরে বন্ধ। জলস্তর নেমে যাওয়ায় গ্রামের নলকূপও খারাপ। একই অবস্থা পাশের গ্রাম গনকহাটি, জলধাপায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পানীয় জলের সমস্যা তো আছেই, স্নানের জলেও টান দেখা দিয়েছে পুকুর, খাল বিলে জল কমে যাওয়ায়। হাঁটুসমান জলে নেমে কোনও মতে স্নান সারতে হচ্ছে।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা সুপর্ণা হালদার, শঙ্কর হালদারদের অভিযোগ, গরম পড়লেই জলের চিন্তায় পড়তে হয়। বিধায়ক, প্রশাসন সকলেই জানে সমস্যার কথা। কিন্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

ধামুয়া দাসপাড়ায় ৭০টি পরিবারের বাস। ওই পাড়ায় একটি মাত্র নলকূপ। তা-ও মাঝে মধ্যেই অকেজো হয়ে পড়ে। কয়েক ঘণ্টা লাইন দিয়ে জল নিতে হয়। পাড়ার বাসিন্দা কানাই দাস, পল্লব দাসরা জানালেন, জল আসা অনিয়মিত। এলেও সরু সুতোর মতো পড়ে। একটা বালতি ভর্তি হতে আধ ঘণ্টা লেগে যায়। ঋঋআবার অনেকের বাড়িতে পাইপ লাইনের সংযোগ থাকলেও দীর্ঘ দিন ধরে জল আসে না। অথচ জলের বিল দিতে হচ্ছে বলেও বাসিন্দাদের অভিযোগ।

সঙ্কটের কথা মেনে নিয়ে বিধায়ক নমিতা সাহা বলেন, ‘‘গ্রামে গ্রামে বেশি করে নলকূপ বসানো হলেও জলস্তর নেমে যাওয়ায় সেগুলিও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ডোঙাড়িয়া জল প্রকল্প থেকে যথেষ্ট পরিমাণ জল না আসায় চাহিদা মিটছে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement