জয়ন্ত নস্করের নামে দেওয়াল লিখন। নিজস্ব চিত্র
এখনও ঠিক হয়নি নির্বাচনের দিনক্ষণ। রাজনৈতিক দলগুলি ভোটযুদ্ধে নেমে পড়লেও প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি এখনও। তবে এরই মধ্যে অন্য ছবি দেখা যাচ্ছে গোসাবার কিছু এলাকায়। সেখানে দেওয়ালে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে জয়ন্ত নস্করের নাম লিখতে শুরু করেছেন দলের কর্মীরা।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বার বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে লড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগদানের পর মমতার এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সরগরম হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। কারণ, শুভেন্দুর খাসতালুক নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েই তাঁকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। ভোটের দিন ঘোষণা হয়নি এখনও। প্রার্থী তালিকা তো দূরের বিষয়। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে জয়ন্তের নামে দেওয়াল লিখন ঘিরে তৃণমূলের অন্দরেই শুরু হয়েছে আলোচনা। এক তৃণমূল নেতা তো বলেই ফেললেন, ‘‘দিদির পর তা হলে আরেকজন প্রার্থীর নাম আমরা জানতে পারলাম।’’
ন’টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত গোসাবা ব্লক। এই ব্লকের চোদ্দটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও বাসন্তী ব্লকের দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত গোসাবা বিধানসভা কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই গোসাবা ব্লকের প্রায় সবক’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেই জয়ন্ত নস্করের নামে দেওয়াল লেখার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। গোসাবা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেশিরভাগ দেওয়াল ইতিমধ্যেই ‘তৃণমূল প্রার্থী জয়ন্ত নস্করকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করার’ আবেদন নিয়ে সেজে উঠেছে। তৃণমূল কর্মীদের দাবি, “নির্বাচনী প্রচার ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। প্রতিদিন বিধানসভার বিভিন্ন প্রান্তে মিটিং, মিছিল চলছে। জয়ন্ত নস্করই আবার এই এলাকা থেকে তৃণমূলের টিকিটে লড়াই করবেন এটা নিশ্চিত। তাই দেওয়াল লেখার কাজ শুরু হয়েছে।” গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তথা এলাকার তৃণমূল নেতা কৈলাশ বিশ্বাস বলেন, “গোসাবা বিধানসভার প্রায় সব দেওয়ালই আমরা দখল করেছি। এখানে বিরোধীরা নিজেদের নাম লেখার জন্য দেওয়াল খুঁজে পাবেন না।” যেহেতু অনেক দেওয়াল দখল করা হয়েছে তা লিখতে অনেকদিন সময় লাগবে, তাই প্রার্থীর নাম ঘোষণার আগেই দেওয়াল লেখার কাজ শুরু হয়েছে বলে দাবি তৃণমূল কর্মীদের।রাজ্যের প্রায় সব প্রান্তেই শাসক বিরোধী সবপক্ষই দেওয়াল দখল শুরু করেছে। প্রার্থীর নাম না লিখলেও দলের প্রতীক চিহ্ন এঁকে দেওয়াল দখলের কাজ চলছে। কিন্তু দলীয়ভাবে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগেই দেওয়ালে প্রার্থী হিসেবে জয়ন্ত নস্করের নাম লেখা হচ্ছে কেন? জয়ন্ত বলেন, “দলীয় কর্মীরা উৎসাহী হয়ে দেওয়ালে নাম লিখে ফেলেছেন। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার আগে দেওয়ালে নাম লেখা যায় না। ওঁরা লিখে ফেললে কী করব?” এ বিষয়ে বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুনীপ দাস বলেন, “দলটার যে আদর্শ নেই তা এতে আরও একবার প্রমাণিত হল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের তোয়াক্কা না করেই নিজেই নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন জয়ন্ত নস্কর। বিজেপির প্রার্থীদের নাম লেখার জন্য দেওয়ালের প্রয়োজন নেই, মানুষের মনে পদ্ম ফুটে গিয়েছে।”