বেহাল: এ ভাবেই উঠে আসছে রাস্তার পিচ। ছবি: সামসুল হুদা
নিম্নমানের মালপত্র দিয়ে রাস্তা তৈরি হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিলেন গ্রামবাসীরা। ভাঙড় ২ ব্লকের কচুয়া গ্রামের ঘটনা। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, গ্রামে নতুন রাস্তা তৈরি করার পর তাতে হাত লাগাতেই পিচ-সহ পাথরের চাঙড় উঠে আসছে। সরকারি ওয়ার্ক অর্ডার মেনে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ।
ভাঙড় ২ ব্লকের শানপুকুর পঞ্চায়েতের কচুয়া বাজার থেকে ছেলেগোয়ালিয়া খালপাড় পর্যন্ত প্রায় ১৭০০ মিটার লম্বা এবং তিন মিটার চওড়া পাকা রাস্তা তৈরি হচ্ছে। জেলা পরিষদের অধীন ওই রাস্তাটি তৈরি করার জন্য প্রায় ৩৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ১৭০০ মিটার লম্বা ওই রাস্তার মধ্যে আগেই ১২০০ মিটার রাস্তার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, বাকি ৫০০ মিটার রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে সমস্যা। নিম্নমানের রাস্তা তৈরির প্রতিবাদে এলাকার মানুষ বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষোভ দেখান। গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত কাজ বন্ধ করে দেন ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা।
দীর্ঘদিন ধরে ওই রাস্তা তৈরির দাবি জানিয়ে আসছিলেন গ্রামের মানুষ। সম্প্রতি পাড়ায় সমাধান নামে সরকারি কর্মসূচিতে ওই রাস্তা তৈরির জন্য ফের আবেদন করেন এলাকাবাসী। সেইমতো সম্প্রতি ওই রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়। স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম, রিঙ্কু মোল্লারা জানান, রাস্তা তৈরির একদিন পরেই সামান্য খোঁচা দিতেই রাস্তার পিচ সহ পাথর উঠে আসছে। যা পরিস্থিতি, তাতে অল্পদিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ রাস্তাটি ভেঙে যাবে। অবিলম্বে সরকারি নিয়ম মেনে ভাল ভাবে রাস্তা তৈরির কাজ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার ডাকও দেন তাঁরা।
ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মাহফুজুর রহমান বলেন, “সরকারি ওয়ার্ক অর্ডার মেনে যাতে ওই রাস্তা তৈরির কাজ হয়, তা নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।” জেলা পরিষদের সহকারী বাস্তুকার রাজু দাস বলেন, “এর আগে যতটুকু রাস্তা তৈরি হয়েছে, সেখানে কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি। কিছু মানুষ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এমনটা করেছে। আমরা সরকারি নিয়ম মেনেই রাস্তা তৈরির কাজ করছি। কোথাও কোনও অভিযোগ থাকলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।” ওই রাস্তা তৈরির ঠিকাদার নারায়ণ রায় বলেন, “এমনিতে প্রচণ্ড ঠান্ডা। তার উপর কুয়াশার কারণে রাস্তা তৈরির পর পিচ ও বিটুমিন জমতে সময় লাগছে। যে কারণে সমস্যা তৈরি হয়েছে।”
ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল ওই রাস্তা পরিদর্শনে যাবেন।