ভিড়: ফেরিঘাটে। নিজস্ব চিত্র
কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল গঙ্গাসাগরে ভেসেল চলাচল। শনিবার বেলা প্রায় ১০টা পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধ রাখতে হয়। শুক্রবার রাতে কুয়াশায় মাঝনদীতে পথ হারায় একাধিক ভেসেল। জলযান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েন বহু পুণ্যার্থী। বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস পরে বলেন, ‘‘ঘন কুয়াশার জন্য ভেসেল পরিষেবা বন্ধ রাখতে হয়েছিল। শনিবার সকালে অতিরিক্ত ভেসেল দিয়ে নদীর দু’দিকে যাত্রীদের সুষ্ঠু ভাবে পারাপার করানো হয়েছে।’’ শনিবার পর্যন্ত প্রায় ৩৯ লক্ষ পুণ্যার্থী মেলা প্রাঙ্গণে এসেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
প্রশাসন সূত্রের খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় কচুবেড়িয়া থেকে লট-৮ ঘাটের মধ্যে পারাপার করতে গিয়ে চারটি ভেসেল পথ হারায়। ‘জিপিএস ট্র্যাকার’ দিয়েও তাদের খোঁজ মিলছিল না দীর্ঘক্ষণ। একটি ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্সকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। প্রায় সাত ঘণ্টা পরে ঘোড়ামারা দ্বীপের কাছে দু’টি ভেসেলের খোঁজ মেলে। অন্য দু’টি ভেসেল মুড়িগঙ্গার মাঝামাঝি বিদ্যুতের টাওয়ারের কাছে পাওয়া যায়। অ্যাম্বুল্যান্সটিরও খোঁজ পাওয়া যায়।
কুয়াশার ফলে শুক্রবার রাত থেকেই কচুবেড়িয়া থেকে লট-৮ পথে ভেসেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। শনিবার সকাল থেকে নামখানা-বেণুবন লঞ্চ পরিষেবাও বন্ধ ছিল। বন্ধ রাখা হয় বাস পরিষেবা। সকাল ১১টা নাগাদ ভেসেল চালু হলে পুণ্যার্থীদের ভিড় সামাল দিতে প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হয়। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভেসেল চালাতে হয়েছে।
বিহার থেকে সাগরে এসেছেন লালু যাদব। তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার রাতে কাকদ্বীপে এসে দেখি, ভেসেল বন্ধ। শনিবার সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হল। কিছুটা ভোগান্তি হল। তবে শেষ পর্যন্ত ঠিকঠাক ভাবেই সাগরে পৌঁছেছি।’’ ঝাড়খণ্ড থেকে আসা গীতাদেবী বাড়ি ফেরার পথে শনিবার সকালে কচুবেড়িয়া ঘাটে আটকে পড়েন। তাঁর কথায়, ‘‘দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসেছিলাম। তারপরে ভেসেল ছেড়েছে।’’
ভূতল পরিবহণ নিগমের কচুবেড়িয়া ঘাটের দায়িত্বে থাকা অর্পণ দাস জানালেন, শুক্রবার রাতে কয়েকটি ভেসেল কুয়াশার জন্য দিকভুল করে দূরে চলে যায়। পরে সেগুলির খোঁজ মিলেছে। পুণ্যার্থীরা সকলেই সুস্থ ভাবে মেলায় পৌঁছেছেন।
এ দিকে, এ দিন সকালে গঙ্গাসাগর থেকে যাত্রী নিয়ে কচুবেড়িয়া যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় পড়ে একটি যাত্রিবাহী গাড়ি। স্থানীয় সূত্রের খবর, জোড়া মন্দিরের কাছে সামনের চাকা ফেটে রাস্তার পাশে একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা মারে গাড়িটি। ৬ জন পুণ্যার্থী আহত হন। তাঁদের সাগর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।