—ফাইল চিত্র
উত্তর ২৪ পরগনায় কয়েকটি কেন্দ্রে প্রবীণেরা টিকা পেলেও জেলা সদর বারাসতে এ দিন চালু করা গেল না প্রবীণদের টিকাকরণ কর্মসূচি। জেলার আরও তিনটি কেন্দ্রেও এই কর্মসূচি এ দিন চালু করা যায়নি। অ্যাপ নিয়ে ভোগান্তির অভিযোগ অবশ্য রয়েছে সর্বত্র।
অ্যাপ কাজ না করার অভিযোগ আগে থেকেই ছিল। কিন্তু ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের অনেকেই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারছেন না। বহুজনের আবার স্মার্ট ফোনই নেই। সরাসরি টিকাকরণ কেন্দ্রে গিয়ে এখনও পর্যন্ত টিকা নেওয়ার সুযোগ এ রাজ্যে নেই। আবার কোউইন অ্যাপের বিকল্প অ্যাপও নেই। ফলে বয়স্ক মানুষদের ভোগান্তি কীভাবে কমবে, তার জবাব মেলেনি। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, দু’-এক দিনের মধ্যেই সব কেন্দ্র থেকেই প্রবীণদের টিকাকরণ শুরু হয়ে যাবে।
রাজ্যে কোভিড সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী। ফলে প্রথম দিকে প্রতিষেধক নিয়ে যে অনীহা ছিল, তা এখন অনেকটাই কমেছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রবীণদের অনেকেই প্রতিষেধক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কো-মর্বিডিটি রয়েছে এমন মানুষেরাও প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য নিয়মিত কেন্দ্রগুলিতে যোগাযোগ করছেন। কিন্তু এত দিন পর্যন্ত সেই সুযোগ ছিল না। সোমবার থেকে সরকারিভাবে প্রবীণদের জন্য টিকাকরণ শুরু হলেও সুযোগ পেলেন না জেলা সদর বারাসত এবং তার আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা।
এ দিন বারাসত জেলা হাসপাতালে ভোটকর্মী এবং পুলিশকর্মীদের টিকাকরণ হলেও প্রবীণদের প্রতিষেধক দেওয়া হয়নি। হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, “এখানে ভোটকর্মীদের প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে বলে চাপ খুব বেশি। সেই জ্ন্য প্রবীণদের প্রতিষেধক কর্মসূচি শুরু করা যায়নি। খুব শিগগিরই তা চালু হবে।”
বারাসত নবপল্লির বাসিন্দা সুরক্তিম সরকার এ দিন বারাসত জেলা হাসপাতালে প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “আমার বয়স বাহাত্তর। সন্তান নেই। স্ত্রীও মারা গিয়েছে। একা থাকি। স্মার্ট ফোন নেই। আমি কী ভাবে টিকা পাব জানি না। তাই হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে বয়স্কদের প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে না বলে জানাল। যে বেসরকারি হাসপাতালে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেখানেও জানাল হচ্ছে না। সরকারি হাসপাতাল বলেছে, আমি আধার কার্ড নিয়ে গেলে ওরা নাম নথিভুক্ত করে দেবে। এটাই যা আশার।”
বিকাশ বিশ্বাস নামের আর এক প্রবীণ বলছেন, “স্মার্ট ফোন থাকলেই বা কী! নাম নথিভুক্ত করা, নথি আপলোড করা কী আমাদের কম্ম। জানি না কী হবে।” প্রবীণদের পরিজনেরা যাঁরা কো-উইন অ্যাপে নাম নথিভুক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন তাঁদের অনেকেই সফল হননি। সেই সমস্যা কী করে মিটবে তা পরিষ্কার হয়নি।
এ দিন জেলায় ১৪টি কেন্দ্র থেকে প্রবীণদের প্রতিষেধক দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, তিনটি কেন্দ্র থেকে প্রতিষেধক দেওয়া যায়নি। তার মধ্যে দুটি বেসরকারি হাসপাতালও রয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, “বেশিরভাগ কেন্দ্রেই এ দিন প্রবীণদের টিকাকরণ শুরু হয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটি বা অন্যান্য কিছু সমস্যার জন্য যে সব কেন্দ্রে টিকাকরণ শুরু হয়নি, দু’-এক দিনের মধ্যেই সেখানে শুরু হয়ে যাবে।”