নিধন: ডেঙ্গি রুখতে বনগাঁ পুরসভা এলাকায় মশা মারার কাজ চলছে। ছবি: সুজিত দুয়ারি।
ডেঙ্গি মশার লার্ভা মারতে জেলায় বায়ো লার্ভিসাইডের ব্যবহার শুরু হচ্ছে।
ব্যাকটিরিয়া দিয়ে তৈরি বায়ো লার্ভিসাইডের ব্যবহারে মশার লার্ভা মারা যায়। জলের ক্ষতি হয় না। জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, ‘‘রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে বায়ো লার্ভিসাইড চেয়েছিলাম। তা পেয়েছি। পুরসভা এবং ব্লকগুলিতে পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে।’’ পতঙ্গবিদদের মতে, বদ্ধ জলে মশার লার্ভা নষ্ট করতে বায়ো লার্ভিসাইড খুব কার্যকর। জেলাশাসক জানান, চলতি বছরে জেলায় এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ জন। এখন সকলেই সুস্থ। ডেঙ্গি রুখতে আগাম পদক্ষেপ করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ডেঙ্গি আক্রান্তদের বেশির ভাগই বিধাননগর পুর-এলাকার বাসিন্দা। খড়দায় ১ জন এবং হাবড়া পুরসভা এলাকায় দু’জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন।
ডেঙ্গি হোক বা করোনা—আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যার নিরিখে বরাবরই শীর্ষে থাকে উত্তর ২৪ পরগনা। অতীতে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে গাফিলতির অভিযোগও উঠছে ভুরি ভুরি। এ বার আগে থেকেই সতর্ক জেলা প্রশাসন। ডেঙ্গি নিয়ে জেলা ‘মনিটরিং কমিটি’র বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা জমাজল সরানো, মশার লাভা শনাক্তকরণ ও তা নষ্ট করার কাজ করছেন। গাপ্পি মাছ ছাড়া হচ্ছে। নিকাশি নালা, খাল-বিল পরিষ্কারে জোর দেওয়া হয়েছে।
জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ জ্যোতি চক্রবর্তীর দাবি, গ্রামীণ এলাকায় এখনও ডেঙ্গিতে কেউ আক্রান্ত হননি। জানুয়ারি থেকে গ্রামীণ এলাকায় ‘ভিলেজ রিসোর্স পার্সন’-দের দিয়ে নালা-নর্দমা পরিষ্কার করা হচ্ছে। সচেতনতার প্রচারও চলছে। ছাড়া হয়েছে গাপ্পি মাছ। ২০১৭ সালে জেলায় ডেঙ্গি ভয়াবহ আকার নিয়েছিল। বিশেষ করে দেগঙ্গা, হাবড়া এবং অশোকনগরে ডেঙ্গির প্রকোপ ছিল বেশি। পরের দু’বছর ডেঙ্গির দাপট থাকলেও গত বছর তা অনেকটাই কমে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শহর ঘেঁষা ৯০টি পঞ্চায়েত এলাকায় বিশেষ নজর দেওয়া
হচ্ছে। সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে মাসে দু’বার সমীক্ষার কাজ করেছেন।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘আগে শহর লাগোয়া ৭৪টি পঞ্চায়েতে বিশেষ নজর দেওয়া হত। এ বার তার সংখ্যা বাড়িয়ে ৯০ করা হয়েছে।’’ এনএস১ পরীক্ষার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। জেলায় বড় ন’টি সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গির পরীক্ষা চলছে। প্রায় সবক’টি পুর-এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও ডেঙ্গি পরীক্ষার ‘কিট’ মজুত রয়েছে।