Sandeshkhali Violence

প্রস্তুতি নেই, আন্দোলনের দ্বীপে সরস্বতী পুজো ঘিরে সংশয়

আড়াই বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সন্দেশখালি দ্বীপে অন্তত ২৫টি বারোয়ারি সরস্বতী পুজো হয়। এখানে প্রতিমাও তৈরি করেন অনেকে।

Advertisement

বিতান ভট্টাচার্য

সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৬:৩২
Share:

প্রায় সম্পূর্ণ প্রতিমা। কিন্তু পুজো হবে কি? সংশয়ে সন্দেশখালির প্রতিমা শিল্পীরা। নিজস্ব চিত্র।

সরস্বতী পুজোর দিন মেয়ের হাতেখড়ি হবে তো!

Advertisement

ভেবে পাচ্ছেন না পুকুরপাড়ার অন্নপূর্ণা সর্দার। পাড়ায় পুজোর তো কোনও উদ্যোগই নেই! অথচ, খুলনা বাজার থেকে মেয়ের জন্য তাঁর শ্লেট, পেন্সিল কেনা হয়ে গিয়েছে।

সব প্রতিমা বিক্রি হবে তো!

Advertisement

ভেবে পাচ্ছেন না অরুণ পাল। দীর্ঘদিন ধরে তিনি প্রতিমা গড়েন। সবই প্রায় বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু এ বার ছবিটা অন্যরকম।

আড়াই বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সন্দেশখালি দ্বীপে অন্তত ২৫টি বারোয়ারি সরস্বতী পুজো হয়। এখানে প্রতিমাও তৈরি করেন অনেকে। অরুণ জানান, এখানে দুর্গাপুজোর চেয়েও বেশি সরস্বতী পুজো হয়। বেশ ধুমধাম করেই। পুজোর চার দিন আগে থেকে সাজো সাজো রব পড়ে যায়। অন্য দ্বীপ থেকেও এখানে প্রতিমা কিনতে আসেন অনেকে। কিন্তু এ বার প্রতিমা কেনার ভিড় কই?

অরুণ বলেন, ‘‘শুনছি অনেকেই পুরো করবে না। মেয়েরা, মায়েরা অসম্মানিত, নির্যাতিত হতে হতে সরব হয়েছেন। ১৪৪ ধারা মেনে বারোয়ারি পুজো তো সম্ভব নয়। কিন্তু প্রায় সম্পূর্ণ হওয়া এত প্রতিমা নিয়ে কী করব, বুঝতে পারছি না।’’

সন্দেশখালির প্রতিবাদ-আন্দোলনের শরিক অন্নপূর্ণা। স্থানীয় মহিলা পরিচালিত পুজোর পুরোহিতকে আগাম বলে রেখেছিলেন, রক্তাল্পতায় ভোগা মেয়ের হাতেখড়ি যদি সকাল সকাল হয়ে যায়, তবে তাকে নিয়ে খুলনা হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে যাবেন। কিন্তু এখন তিনিও ধন্দে।

অন্নপূর্ণা বলেন, ‘‘মেয়েটার হাতেখড়ি হবে না! এটাও মন মানছে না। পাড়ায় পুজো যখন বন্ধ, তখন খুলনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে কোনও মণ্ডপে না হয় ওর হাতেখড়ি দেওয়ানোর অনুরোধ করব। আর ১৪৪ ধারা দিয়ে তো আমাদের দমিয়ে রাখা হয়েছে। এটা উঠলে আবার আমরা একত্রিত হব।’’

পুলিশ নিয়মমাফিক রুটমার্চ করছে সন্দেশখালি থানা এলাকার পাঁচটি দ্বীপ জুড়ে। চলছে কড়া নজরদারি। এমন পরিস্থিতিতে পুজোর আয়োজন করতে ভয় পাচ্ছেন বারোয়ারি সরস্বতী পুজোর অনেক আয়োজকই।

মাঝেরপাড়া সুসংহত শিশু বিকাশ কেন্দ্রের পাশে, খুলনা খেয়াঘাট যাওয়ার পথে, ত্রিমণী বাজারের কাছে বেশ কয়েকটি বড় পুজোর কোনও প্রস্তুতিই এখনও সারা হয়নি। কিছু জায়গায় মণ্ডপের কাজ শুরু হয়েও থমকে আছে। কোথাও আয়োজনের চিহ্নমাত্র নেই। স্থানীয় বাসিন্দা বেলা দাস, নন্দিতা দে’রা বলেন, ‘‘এই দ্বীপে সরস্বতী পুজোয় অন্য দ্বীপ থেকে লোকজন আসে। একসঙ্গে খাওয়া, নানা অনুষ্ঠানও হয়। এ বার তো পরিবেশটাই অন্যরকম। পুজো হয়তো নামমাত্র হবে কিছু জায়গায়। ১৪৪ ধারা জারি থাকলে পুজোয় সবাই একত্রিত হবই বা কেমন করে?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement