প্রতীকী ছবি।
ভোটের মুখে বসিরহাট পুলিশ জেলা ভেঙে আরও দু’টি পুলিশ মহকুমা বাড়ানো হল। এত দিন পর্যন্ত বসিরহাট পুলিশ জেলার অধীনে ছিল মিনাখাঁ ও বসিরহাট— দু’টি পুলিশ মহকুমা। ছিলেন দু’জন এসডিপিও। এ বার এসডিপিওর সংখ্যা বাড়ল আরও দু’জন। দু’টি নতুন পুলিশ মহকুমা হয়েছে বাদুড়িয়া ও হাসনাবাদ। তবে পুলিশ কর্মীর সংখ্যা, গাড়ি বা অন্য পরিকাঠামো কী বাড়ছে, তার স্পষ্ট পরিসংখ্যান মেলেনি পুলিশ কর্তাদের কাছে।
বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার জবি থমাস বলেন, ‘‘বসিরহাটে সীমান্ত, দ্বীপ, নদী থাকায় পুলিশি নজরদারির সুবিধার জন্য ছোট ছোট পুলিশ মহকুমা করা হয়েছে। এর ফলে পুলিশের কাজে আরও সুবিধা হবে।’’
বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘‘সীমান্তবর্তী শহরে পুলিশি তৎপরতা জরুরি। পুলিশ মহকুমা বাড়ানোয় নজরদারিও বাড়বে। সাধারণ মানুষের সুবিধা হবে।’’
বিরোধীরা অবশ্য প্রশাসনিক এই সিদ্ধান্তে বিশেষ ভরসা পাচ্ছে না।
বিজেপির জেলা সভাপতি তারক ঘোষ বলেন, ‘‘সত্যিই যদি মানুষের সুরক্ষা এবং উপকার করতে চাওয়া হয়, তা হলে আগে কেন পুলিশ মহকুমা বাড়ানো হল না? আসলে ভোটের মুখে বিরোধীদের চাপে মানুষের চোখে ধুলো দিতেই এমন সিদ্ধান্ত।’’ তাঁর দাবি, বসিরহাটের পুলিশকে যাতে নির্বাচনের আগে অন্য মহকুমায় সরিয়ে দিতে না হয়, সে জন্য বসিরহাট পুলিশ মহকুমা বাড়ানো হল।
টাউন কংগ্রেসের সভাপতি হিরন্ময় দাস বলেন, ‘‘পরিকাঠামোর উন্নতি না করে ছোট ছোট পুলিশ মহকুমা করে দুষ্কৃতী দমন সম্ভব নয়। এর ফলে পুলিশের সাফল্য মেলার থেকে মনোবল ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।’’
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য শ্রীদীপ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এটা রাজনৈতিক চমক ছাড়া আর কিছু নয়। বিরোধীদের শাসনের উদ্দেশ্যে এই পরিকল্পনা।’’
পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সাম্প্রতিক অতীতে রাজনৈতিক হানাহানি, খুন, ধর্ষণের বহু ঘটনা ঘটেছে বসিরহাটে। আগ্নেয়াস্ত্রের কারখানার হদিশ মিলেছে। জঙ্গি-যোগে ধরা পড়েছে কলেজ ছাত্রী। হিংসার ঘটনাও ঘটেছে গত কয়েক বছরে। সব মিলিয়ে সীমান্তবর্তী জেলা বসিরহাটের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠছিল পুলিশ-প্রশাসনের কাছে। এ বার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য বসিরহাট পুলিশ জেলার অধীনে ৪টি পুলিশ মহকুমা করা হল। এখন থেকে বসিরহাট মহকুমার ১১টি থানা এলাকা দেখবেন ৪ জন এসডিপিও এবং একজন আইসি। আইসি শুধু বসিরহাট থানা এলাকা দেখবেন। তাঁদের মাথার উপরে থাকছেন পুলিশ সুপার সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা।