অসীম ঈশ্বর। —নিজস্ব চিত্র।
নরেন্দ্রপুরের একটি স্কুলে শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনায় আরও চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এর মধ্যে তৃণমূল নেতা প্রবীর সর্দার ওরফে ছোটন ও তাঁর সঙ্গী অসীম ঈশ্বরকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনার যে ভিডিয়ো ভাইরাল (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) হয়েছিল, তাতে ওই দু’জনকে দেখা গিয়েছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দু’জনের বাড়ি বিষ্ণুপুর থানা এলাকায়। এফআইআরে নাম থাকা পঞ্চায়েত সদস্য অলোক নাড়ু এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মনিজুর রহমান মণ্ডলকে শুক্রবার ভোরে গ্রেফতার করে পুলিশ। নরেন্দ্রপুরের ঘটনায় এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট আট জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এফআইআরে নাম থাকা স্কুলের প্রধানশিক্ষক সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ, যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আকবর আলি খান হাই কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও এখনও অধরা। অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষক আলিপুর জেলা আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি সেই মামলার শুনানি রয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে স্কুল চত্বরে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা।
এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ঘিরে গত শনিবার ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুরের বলরামপুর মন্মথনাথ বিদ্যামন্দিরে। স্কুলে ঢুকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছিল কয়েক জন বহিরাগতের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। হামলার অভিযোগ তুলে শনিবার রাতে নরেন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অভিযোগ তোলা হয় প্রধানশিক্ষক সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ, বনহুগলি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য অলোক নাড়ু, পঞ্চায়েতের সদস্য ও বনহুগলি তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি আকবর আলি খান ও স্কুলের পরিচালন কমিটির সদস্য মনিজুর রহমানের বিরুদ্ধে।
ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছিল, স্কুলের ‘স্টাফ রুম’-এ শিক্ষিকারা ভীত মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। মেঝেতে ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে কাগজপত্র। কয়েক জন শিক্ষিকা অভিযোগের সুরে বলেন, ‘‘আমাদের মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছে।’’ ‘হামলা’র পর কান্নায় ভেঙে পড়েন কয়েক জন শিক্ষিকা। অভিযোগ, তাঁদের শারীরিক ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। প্রধানশিক্ষকের অবশ্য বক্তব্য, স্কুলে যৌন হেনস্থার একটি ঘটনা ঘটেছে। তার জেরে অভিভাবকদের একাংশ হামলা চালান। তাঁর মদতে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধানশিক্ষক। অস্বীকার করেছেন দুর্নীতির অভিযোগও।