নিজস্ব চিত্র
শাসনের সর্দারহাটিতে এক ব্যক্তি ও এক মহিলাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর ও হেনস্থার ঘটনায় সোমবার দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনায় জড়িত বাকিদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় রাত পর্যন্ত তল্লাশি চলেছে। বারাসত পুলিশ জেলার সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। দোষীদের কাউকে ছাড়া হবে না।’’
শনিবার শাসনের সর্দারহাটির বিশ্বাসপাড়ায় ওই ব্যক্তি এবং এক মহিলাকে গাছে বেঁধে মারধর করা হয়। মহিলার মুখে দই ঢেলে দেওয়া হয়। হেনস্থাকারীদের অভিযোগ ছিল, দু’জনের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। এই নিগ্রহের ছবি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে।
নিগৃহীত ওই ব্যক্তি রবিবার অভিযোগ করেছিলেন, ঘটনার পিছনে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ জড়িত। এ-ও জানিয়েছিলেন, তিনি নিজে তৃণমূলপন্থী বলে দলের কারও বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ জানাতে চাননি।
অভিযোগ, শনিবারের ওই ঘটনার পরে রবিবার সারা দিন কেটে গেলেও হেনস্থাকারীদের ধরতে উদ্যোগী হয়নি থানা। তারা জানিয়েছিল, এমন অভিযোগ তাদের কাছে কেউ করেননি। ওই ব্যক্তি ও মহিলাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করা হয়েছিল থানার তরফে। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, স্বত:প্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করার অধিকার থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কেন অভিযোগ দায়ের হওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকবে?
সোমবার ঘটনার খবর সামনে আসতেই নড়ে বসে বারাসত পুলিশ জেলা। সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরেই শাসন থানার কাছে বারাসত থেকে নির্দেশ যায় অবিলম্বে ঘটনার তদন্ত শুরু করার। এর পরেই পুলিশ খুঁজে বার করে এক প্রত্যক্ষদর্শীকে। তিনিই মামলা দায়ের করেন বলে খবর। বিকেলের মধ্যেই কুরান মণ্ডল ও অজয় মল্লিক নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারা যুক্ত করা হয়েছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। কিন্তু এই কাজ কেন শনিবার থেকে রবিবার রাত পর্যন্ত করা হল না, তার উত্তর মেলেনি।
স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিগৃহীতা ওই মহিলা সিপিএম করতেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। রাজনৈতিক রেষারেষিকে কেন্দ্র করে মহিলার ছেলের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূলের এক নেতা-সহ কয়েক জন গ্রেফতার হন। তাই শনিবারের ওই ঘটনার পিছনে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগকে সামনে রেখে মহিলার উপরেও শোধ নেওয়া হল কি না, তা নিয়েও চর্চা চলছে সর্দারহাটিতে।