নৈহাটি পুরসভা। —ফাইল চিত্র
নৈহাটির পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটি হবে উত্তর ২৪ পরগনা জেলাশাসকের অফিসে। হাইকোর্ট তেমনই নির্দেশ দিয়েছে। ফলে মঙ্গলবার পুরপ্রধান অনাস্থার উপরে যে তলবি সভা ডেকেছিলেন, তা বাতিল করা হয়। তবে জেলাশাসকের দফতরে সেই সভা কবে হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি।
মঙ্গলবারই নৈহাটি পুরসভা তাদের হাতে আসবে বলে তৃণমূল নিশ্চিত ছিল। তা হল না। তবে ঘাসফুল শিবিরের দাবি, নৈহাটিতে তাদের হাতে ২৫ জন কাউন্সিলরের সমর্থন রয়েছে। ফলে ৩৩ আসনের পুরসভায় ক্ষমতায় ফেরা শুধু সময়ের অপেক্ষা।
লোকসভা ভোটে বিজেপি ব্যারাকপুর কেন্দ্রে জিতে যায়। তার পরে একে একে এই কেন্দ্রের প্রায় সব ক’টি পুরসভাই দখল নেয় বিজেপি। তৃণমূল কাউন্সিলরদের দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে বিজেপিতে যোগদানের কথা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু বেশি দিন পুরসভাগুলি ধরে রাখতে পারল না তারা।
বিপর্যয়ের শুরু গারুলিয়া পুরসভা দিয়ে। বিজেপিতে যাওয়া সিংহভাগ কাউন্সিলর তৃণমূলে ফেরেন। কাঁচরাপাড়ার পুরসভাতেও একই ঘটনা। কিছু দিন পরে গারুলিয়া পুরসভায় বিজেপিতে যাওয়া কাউন্সিলরেরা ফের পুরনো শিবিরেই ফেরেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার পরে গারুলিয়ার পুরপ্রধান সুনীল সিংহের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়। সুনীল অনাস্থার মুখোমুখি না হয়ে পদত্যাগ করেন।
নৈহাটির বিষয়টি একটু অন্য রকম। সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই অচলাবস্থা শুরু হয় পুরসভায়। তিনি পুরসভা চালাতে পারছেন না বলে রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দেন পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায়। তারপরেই রাজ্য ওই পুরসভায় প্রশাসক বসিয়ে দেয়। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে বিজেপি। পাশাপাশি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় তারা।
দীর্ঘ দিন মামলা চলার পরে দিন কয়েক আগে হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, অনাস্থার মুখোমুখি হতেই হবে পুরপ্রধানকে। বনগাঁ পুরসভার প্রথম দফার অনাস্থায় গোলমাল হয়েছিল বলে পরে জেলাশাসকের অফিসে অনাস্থার উপর ভোটাভুটি নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও হাইকোর্ট সেই একই নির্দেশ দিয়েছে। এ দিকে, সেই নির্দেশ হাতে পাওয়ার আগেই ভোটাভুটির জন্য মঙ্গলবার তলবি সভা ডাকেন পুরপ্রধান। কিন্তু সোমবার রাতে সেই নির্দেশ হাতে পাওয়ার পরে ফের কাউন্সিলদের সভা বাতিলের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
অশোক বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ আমরা মেনে চলব। পুরসভা হাতে আসা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’