গরমের মধ্যেই চলছে পড়াশোনা। বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
বাগদার সিন্দ্রাণী এলাকার বাসিন্দা শুভঙ্কর সাহা রবিবার সকাল থেকেই তোড়জোড় করছিলেন জার্মানি আর মেক্সিকোর খেলা দেখার জন্য। কিন্তু খেলা দেখা আর হল না ওই স্কুলশিক্ষকের। সৌজন্যে, লোডশেডিং।
শুভঙ্করবাবু বলেন, ‘‘রাত ৯টা নাগাদ এলাকায় লোডশেডিং হয়। রাত ১১টা ৪০মিনিট নাগাদ যখন বিদ্যুৎ আসে তখন জার্মানির খেলা শেষ। এমনকী ব্রাজিল ও সুইৎজারল্যান্ডের খেলাও শুরু হয়ে গিয়েছিল।’’ শুধু সিন্দ্রাণী নয় গোটা বাগদা ব্লকেই রবিবার রাতে দীর্ঘক্ষণ লোডশেডিং ছিল। ফলে এ দিকে যেমন এলাকার মানুষ বিশ্বকাপ ফুটবল দেখতে পাননি। তেমনি তীব্র গরমে কষ্ট পেয়েছেন। কারণ কোথাও কোথাও রাত ১২টার পর বিদ্যুৎ সংযোগ এসেছে। সীমান্তবর্তী বাগদা ব্লকে এখনও ঘরে ঘরে ইনভার্টার বা জেনারেটরের ব্যবস্থা নেই। ফলে লোডশেডিং হলে এলাকাবাসী সমস্যায় পড়েন। এলাকার মানুষ জানান, মাঝেমধ্যেই লোডশেডিং হচ্ছে। পড়ুয়ারা গরমে লেখাপড়া করতে পারছে না। রাতে গরমের কারণেও ঘুম হচ্ছে না। হাতপাখা দিয়ে বেশিক্ষণ কাজ চলে না।
বাগদার নাটাবেড়িয়া বাজার এবং সংলগ্ন কয়েকটি এলাকায় লো-ভোল্টেজের বেশি সমস্যা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘লো-ভোল্টেজের সঙ্গে এখন চলছে লোডশেডিংও। ফলে কোনও কাজই ঠিকমতো করা যায় না।’’
কী বলছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা? বনগাঁর ডিভিশনাল ম্যানেজার রজতকুমার টিকাদার বলেন, ‘‘রবিবার ৩৩ হাজার ভোল্টের লাইনে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তা খুঁজে বের করে মেরামত করতে কিছুটা সময় লাগবে।’’ সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, গোপালনগরের চালকি থেকে বাগদার হেলেঞ্চা পর্যন্ত প্রায় ২৮ কিলোমিটার পথে বিদ্যুতের লাইন গিয়েছে। ওই লাইনে ফল্ট হলে তা খুঁজে বের করতে সময় লাগে। নাটাবেড়িয়া এলাকায় বিদ্যুতের সাব স্টেশন তৈরির কাজ চলছে। শেষ হলে লো-ভোল্টেজের সমস্যা আর থাকবে না। শনিবার রাতে বনগাঁ শহরে কয়েক দফায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। গরম থেকে বাঁচতে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষকে রাস্তায় দেখা গিয়েছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, আগে সবসময় বিদ্যুৎ থাকত। ফলে জেনারেটরের ব্যবসা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যদিও বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার তরফে লোডশেডিংয়ের কথা অস্বীকার করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, লোডশেডিং এখন কোথাও হচ্ছে না। কোথাও লোডশেডিং করতে হলে আগে থেকে নোটিস দিয়ে, মাইকে ঘোষণা করেই তা করা হয়। ঝড়-বৃষ্টির কারণে অনেক সময়ে লাইনে সমস্যা হয়। কাজ করার সময় বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হয়। তা ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ করতে গিয়েও কিছুক্ষণের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়।