৯ যুবকের সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানাতেই তাঁদের প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। নিজস্ব চিত্র।
৯ জানুয়ারি ডায়মন্ড হারবার এবং গুরুদাসনগরের মাঝে লালবাটি রেলগেটের কাছে লাইনে ফাটল দেখে লাল জ্যাকেট উড়িয়ে দুর্ঘটনা আটকেছিলেন একদল যুবক। দুর্ঘটনার হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিল শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার একটি লোকাল ট্রেন। প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে সেই ‘হিরো’দেরই হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হল ডায়মন্ড হারবার মহকুমা শাসক ও ডায়মন্ড হারবার মহকুমা পুলিশের তরফে।
নয় যুবক আবির হালদার, মানোয়ার হালদার, ফিরোজ মোল্লা, নুর মহম্মদ মোল্লা, আব্দুল লস্কর, হানিফ মোল্লা, সাইদুল মোল্লা, ইনসান মোল্লা, সিরাজুল মোল্লার রামচন্দ্রপুরের স্থানীয় বাসিন্দা। ৯ জানুয়ারি সোমবার তাঁরা সংগ্রামপুর থেকে ফুটবল খেলে ফিরছিলেন। রেললাইন ধরে হাঁটার সময় তাঁরা দেখেন, রেললাইনের একটি অংশ ভেঙে গিয়েছে। সেই সময় বিকেল ৪টে ৫০ মিনিটের ডায়মন্ড হারবার স্টেশন থেকে আসা আপ শিয়ালদহ লোকাল ট্রেন ওই পথে যাওয়ার সময় হয়েছে। বুঝতে পারেন বিপদ আসন্ন। এক জনের পরনের লাল জ্যাকেট খুলে ওড়াতে থাকেন তাঁরা। স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে কিছুটা এগিয়ে ওই যুবকদের লাল জ্যাকেট ওড়াতে দেখে দাঁড়িয়ে যায় ট্রেনটি। তত ক্ষণে এক যুবক স্টেশনে পৌঁছে রেললাইন ভাঙার খবর জানাতে চলে গিয়েছেন। খবর পেয়ে স্টেশন মাস্টার-সহ অন্যরাও ছুটে আসেন সেখানে। বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় লোকাল ট্রেনটি। তবে লাইনে ফাটল থাকায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয় ওই রেলপথে। সন্ধ্যা নাগাদ আবার ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
৯ যুবকের সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানাতেই তাঁদের প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। সেই মতোই বৃহস্পতিবার তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হল। সম্মান পেয়ে খুশি দুর্ঘটনা রুখে দেওয়া ৯ যুবকও।
পুরস্কার পাওয়ার পর মানোয়ার বলেন, ‘‘এই সম্মান পেয়ে আমরা খুব খুশি। কিন্তু আমরা কোনও কিছু পাওয়ার আশায় কিছু করিনি। খেলে ফেরার পথে দেখি রেললাইনে ফাটল। বুঝতে পারি ট্রেন না থামালে বড়সড় বিপদ ঘটতে পারে। প্রাণহানির আশঙ্কাও থাকবে। তাই প্রাণপণে ট্রেন আটকানোর চেষ্টা করেছিলাম।’’