উৎসাহ: দু’বছর পরে ফের দেখা যাচ্ছে পরিচিত ভিড়। নিজস্ব চিত্র ।
জাঁকিয়ে শীত পড়তেই পর্যটকদের ঢল নামতে শুরু করেছে সুন্দরবনে। করোনা সংক্রমণের জেরে দীর্ঘদিন সুন্দরবনের পর্যটন বন্ধ ছিল। ১ অক্টোবর থেকে বন দফতরের তরফে পর্যটন চালুর অনুমতি মেলে। খুলে দেওয়া হয় সজনেখালি, সুধন্যখালি, নেতিধোপানি, হরিখালি-সহ অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রগুলি। সুধন্যখালি ও ঝড়খালি পর্যটন স্থল অবশ্য এখনও বন্ধ রয়েছে। তবে নদীতে ঘুরে সুন্দরবনের জল, জঙ্গল আর বন্যপ্রাণ দর্শনের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ নেই। তাই শীতের মিঠে রোদ গায়ে মেখে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক শোভা উপভোগ করতে দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকেরা ভিড় করছেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, সপ্তাহান্তে প্রতিদিন তিন-চার হাজার করে পর্যটক সুন্দরবনে আসছেন।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানালেন, করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে প্রতিটি ট্যুরের আগে ও পরে লঞ্চ, ভুটভুটি জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। পর্যটকদের মধ্যে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার বিতরণ করা হচ্ছে। পর্যটন ব্যবসায়ী নিউটন সরকার বলেন, “শীত পড়তেই প্রচুর পর্যটক আসছেন সুন্দরবনে। বিশেষ করে সপ্তাহের শেষ দিনগুলিতে ভিড় বাড়ছে। অন্য ছুটির দিনগুলিতেও প্রচুর মানুষ আসছেন। সমস্ত সরকারি নির্দেশিকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ট্যুর করছি আমরা।” তাঁদের দাবি, ইতিমধ্যেই বড়দিন-সহ ডিসেম্বরের শেষ কয়েক দিন, এমনকী জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বুকিংও অনেকটাই হয়ে গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, কোথাও যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে। ক্রমাগত নদীতে টহলদারি চলছে। সুন্দরবন ভ্রমণের সময়ে পর্যটকেরা যাতে উচ্চস্বরে মাইক বা বক্স বাজিয়ে জঙ্গলের পরিবেশ নষ্ট না করেন, সে দিকেও বন দফতর ও পুলিশ যৌথ ভাবে নজর রাখছে। প্লাস্টিক ব্যবহারের উপরে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বন দফতর। সুন্দরবনের নদীতে বা জঙ্গলে প্লাস্টিক না ফেলার জন্য কড়া বার্তা দেওয়া হচ্ছে পর্যটকদের।
সুন্দরবন পিপল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক উপানন্দ বৈদ্য বলেন, “দীর্ঘদিন পর্যটন বন্ধ থাকায়, এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে এ বার যে ভাবে পর্যটকদের ঢল নেমেছে, তাতে আমরা খুশি। সমস্ত সরকারি বিধিনিষেধ মেনেই ট্যুর চলছে। আশা করি, পর্যটকেরা সময়টা উপভোগ করবেন। সেই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের মুখেও হাসি ফুটবে।”