নির্দল প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়েই বিজয় মিছিল। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা।
দলের টিকিট না পেয়ে যাঁরা নির্দল হিসেবে ভোটে লড়েছেন, ভোটের আগে তাঁদের বিরুদ্ধে বার বার কড়া অবস্থান নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। নির্দলদের কোনও ভাবে দলে ফেরানো হবে না বলে বার্তা গিয়েছে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফেও। তবে উঁচুতলার সেই বার্তা কতটা কাজে আসবে, তা নিয়ে সংশয় দানা বাঁধছে ভোটের পর থেকে। এ বার এখানে তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী নির্দলকে সঙ্গে নিয়ে বিজয় মিছিল করলেন দলের নেতারা।
গোসাবা ব্লকের আমতলি পঞ্চায়েতের জয়ী নির্দল প্রার্থীদের নিয়ে আমতলিতে বিজয় মিছিল হয়েছে মঙ্গলবার। হেঁটে, আবার কখনও নির্দল প্রার্থীর প্রতীক চিহ্ন ট্রাক্টরে চেপে বিজয় মিছিল করেন আমতলি অঞ্চল তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে আমতলি পঞ্চায়েতের গ্রামসভার ১৫টি ও পঞ্চায়েত সমিতির ৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূল দলীয় প্রতীকে গ্রামসভায় ৮টি আসনে জয় লাভ করে। বাকি ৭টি আসনে নির্দল প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের নেতাদের মধ্যে টিকিট ভাগাভাগি হয়। গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মণ্ডলের অনুগামীরা গ্রামসভায় ৭টি আসনে তৃণমূলের প্রতীকে লড়াই করেন। একটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনেও লড়াই করেন তাঁরা। অন্য দিকে, আমতলি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান রঞ্জন মণ্ডলের অনুগামীরা গ্রাম সভায় ৮টি আসনে ও পঞ্চায়েত সমিতির ২টি আসনে লড়াই করেন। সব আসনেই বিধায়ক অনুগামী ও রঞ্জন অনুগামীরা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে গোঁজ হিসেবে নির্দল প্রার্থীদের লড়াইয়ে নামান। বিধায়কের অনুগামীরা আবার তিনটি আসনে বিজেপি প্রার্থীকেও সমর্থন করেন।
ফল ঘোষণার পরে দেখা যায়।, রঞ্জনের অনুগামীরা গ্রামসভায় ৬টি আসনে দলীয় প্রতীকে জয়লাভ করেন এবং তিনটি আসনে নির্দল হিসেবে জয়ী হন। অন্য দিকে, বিধায়কের অনুগামীরা ৪টি আসনে দলীয় প্রার্থী ও ২টি নির্দল প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন। এই ঘটনায় গোসাবার আমতলিতে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল আরও একবার প্রকাশ্যে চলে এল।
বিধায়ক ও তাঁর অনুগামীদের হারিয়ে জয় পেয়েছেন রঞ্জন। তাঁর অনুগামী সমস্ত জয়ী প্রার্থীদের নিয়ে বিজয় উৎসব করলেন তিনিই। রঞ্জন বলেন, “এই জয় নৈতিকতার জয়। এই জয় তৃণমূলের জয়। দলের প্রার্থীদের হারাতে বিধায়ক বিজেপি প্রার্থীদের মদত দিয়েছেন। পাশাপাশি, দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থীদের দাঁড় করিয়েছেন ভোটে। আমাদের যাঁরা নির্দল হয়ে জিতেছেন, সকলেই তৃণমূলের কর্মী। অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করতে চাননি বলে তাঁদের দলের টিকিট দেওয়া হয়নি।”
যদিও এই বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ বিধায়ক। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে যা বলার দলের উপর মহলে জানিয়েছি। ওঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।”